করোনা দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল দেশ। ভয়াবহ পরিস্থিতি গোটা দেশ সহ রাজধানীর। মাত্রা ছাড়া দৈনিক সংক্রমণ। এর জেরে সোমবার রাত থেকে আগামী এক সপ্তাহের জন্য দিল্লিতে লকডাউন জারি করল কেজরিওয়াল সরকার।
রবিবারই সাংবাদিক বৈঠকে দিল্লির ভয়াবহ পরিস্থিতি জানাতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানান, গোটা দিল্লিতে আর মাত্র ১০০ ICU বেড রয়েছে। পর্যাপ্ত অক্সিজেনেরও অভাবও চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। করোনার দৈনিক সংক্রমণের চেন ভাঙতেই রাজ্য জুড়ে ছয় দিনের জন্য জারি ১৪৪ ধারা। আজ অর্থাৎ সোমবার রাত ১০টা থেকে আগামী সোমবার সকাল পাঁচটা পর্যন্ত লাগু থাকবে লকডাউন।
সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জনতার কাছে আর্জি জানান, ‘ স্বাস্থ্য পরিষেবা যাতে ভেঙে না পড়ে তার জন্য এই ছোট লকডাউন। যেভাবে সংক্রমণ মাত্রা ছাড়াচ্ছে তার জন্য প্রয়োজন এই লকডাউন। এই ছয় দিনের মধ্যে সরকার আরও বেড, আরও ওষুধ ও অক্সিজেনের ব্যবস্থা করবে।’ একইসঙ্গে পরিযায়ী শ্রমিকদের কাছে তাঁর আবেদন দিল্লি ছেড়ে না যাওয়ার। কেজরিওয়ালের আশ্বাস, সাময়িক পরিস্থিতি সামলাতেই জারি এই সীমিত সময়ের লকডাউন।
প্রসঙ্গত, রবিবারই দিল্লিতে এখনও পর্যন্ত সর্বাধিক দৈনিক সংক্রমণ হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫,৪৬২ জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এর জেরেই এদিন লকডাউনের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ছয়দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ছাড়া সমস্ত দোকানপাট বন্ধ থাকবে। সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে রাজ্যের বাসিন্দাদের না বেরনোর আর্জি করেছে সরকার। তবে চালু থাকবে সমস্ত জরুরি পরিষেবা।
টানা পাঁচ দিন ধরে দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখের গণ্ডি পার করছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বুলেটিন জানান দিচ্ছে, গত পাঁচ দিনে ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১২ লাখেরও বেশি মানুষ। দৈনিক সংক্রমণের বিশ্বের মধ্যে নজিরবিহীন রেকর্ড গড়ছে দেশ। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে নতুন করে কৌশল পরিবর্তন করতে হবে বলেই মনে করছেন বিশ্বেষজ্ঞরা।
ইতিমধ্যেই দেশের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দেশবাসীর প্রতি তাঁর বার্তা, ‘আগের দফার মতোই আমরা দ্রুত ও সফল ভাবে এবারও কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে পারব।’ তবে সে ক্ষেত্রে নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করে দেশের অর্থনীতি যে ভেঙে পড়বে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। যদিও সংক্রমণ বৃদ্ধির ভয়াবহতা ক্রমশই লকডাউনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে ভারতে। এমনটাই মত বিশেষজ্ঞ মহলের।
Be the first to comment