দীপাবলি এখনও দুদিন দূরে। আতসবাজি পোড়েনি। তবুও মাত্রাছাড়া বায়ুদূষণে নাকাল রাজধানী দিল্লি। সোমবার সকালে দিল্লিবাসীর ঘুম ভেঙেছে যখন তখন থেকেই ঘন ধোঁয়াশায় শহর ঢাকা। বায়ুর সবচেয়ে বিপজ্জনক দূযণকারী পদার্থ পার্টিকুলেট ম্যাটার বা সূক্ষ্ম কণা রয়েছে ৬৪৪, যা নিরাপদ মাত্রার প্রায় ২০ গুণ বেশি। বাতাসের যা মান তাতে একটি সদ্যোজাত শিশুর দিনে ২৫টি সিগারেট খাওয়ার মতো ক্ষতি হচ্ছে!
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আগেই বলেছে, দূষণজনিত ধোঁয়াশার কারণে প্রতি বছর ১০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। প্রতি নভেম্বরে দিল্লির হাসপাতালগুলি শ্বাসকষ্টের রোগীতে ভরে যায়। ফুসফুসের অসুখ যাঁদের আছে, তাঁদের পক্ষে দিল্লির বাতাস মৃত্যুদণ্ড বললে বাড়িয়ে বলা হয় না। তাপমাত্রা যত কমতে থাকে, তত সূক্ষ্ম কণা-সহ অন্য দূযণ মাটির কাছাকাছি আটকে থাকে। উপরে বায়ুস্তরে ভেসে যেতে পারে না। ফলে শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে সঙ্গে ফুসফুস ও রক্তপ্রবাহে মিশে যায় পার্টিকুলেট ম্যাটার।
নভেম্বরে দিল্লির বায়ুদূষণ বাড়ে তার কারণ বাজি, গাড়ির ধোঁয়া, নির্মাণকাজের ধুলো আর আশপাশের এলাকায় ফসল কেটে নেওয়ার পর শুকনো খড় ইত্যাদি জ্বালানোর প্রবণতা। তার সঙ্গে কমতে থাকে তাপমাত্রা। ফলে শহরের বায়ুস্তরের একেবারে নীচের দিকে আটকে থাকে জমাট বাঁধা দূষণ। দিল্লির দূষণ এই সময় এমন অবস্থায় পৌঁছয় যে কোনও পরিমাপারী যন্ত্রে তাকে মাপা যায় না। এবং এই পরিস্থিতি চলতে থাকে প্রায় ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত। ফলে শ্বাসরোগ বা অ্যাজ়মা যাঁদের আছে, তাঁরা তো বটেই, বৃদ্ধ ও শিশুদের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। যে হেতু শিশুরা তাড়াতাড়ি শ্বাস নেয়, তাদের শ্বাস নেওয়ার হার বড়দের চেয়ে অনেকটাই বেশি। প্রতিবার শ্বাসের সঙ্গে তাদের দেহে প্রবেশ করে ভয়ানক সব দূষণকারী পদার্থ।
দিল্লির বিশিষ্ট ফুসফুস বিশেষজ্ঞ অরবিন্দ কুমার জানিয়েছেন, যাঁরা সারাজীবন দিল্লিতে বসবাস করেছেন, এমন অনেক রোগীর ফুসফুস একেবারে কালো হয়ে গেছে। এমনকী কিশোরী-কিশোরীদের ফুসফুসেও কালো ছোপ পাওয়া যাচ্ছে। সামগ্রিক ভাবে দিল্লির বায়ুদূষণ নিয়ে রীতিমতো আবহাওয়াবিদরা।
Be the first to comment