লাগামছাড়া দূষণের জন্য দু’দিন লকডাউনের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করতে পারে দিল্লি সরকার। কেন্দ্রকে এমনই পরামর্শ দিল সুপ্রিম কোর্ট। সেইসঙ্গে সবপক্ষকে নিয়ে কেন্দ্রকে জরুরি ভিত্তিতে একটি বৈঠকের নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
রাজধানীতে ক্রমহ্রাসমান বায়ুর মান নিয়ে দায়ের হওয়া একটি পিটিশনের শুনানিতে শনিবার কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা একাধিক সমস্যা তুলে ধরেন। প্রাথমিকভাবে সব সমস্যায় ঘুরেফিরে কৃষকরা আসছিলেন। সেই সওয়ালের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি এন ভি রামান্নার নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ বলে, ‘আপনি এমনভাবে বলছেন যেন এটার (দূষণের) জন্য কৃষকরা দায়ী! (ফসলের গোড়া) পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকরী পরিকল্পনা কোথায়?’
সলিসিটর জেনারেল দাবি করেন, তিনি কৃষকদের দায়ী করেননি। পালটা প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি একটা বিষয় পরিষ্কার করে দিচ্ছি, কোন সরকার আছে, তা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। আমার প্রশ্ন হল যে কীভাবে এই ভয়াবহ পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে। এটা নিয়ন্ত্রণ করতে স্বল্পকালীন সময় জরুরি পদক্ষেপ (কী আছে)?’
শনিবারের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি আক্ষেপ প্রকাশ করে জানান, পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে বাড়িতে মাস্ক পরতে হচ্ছে। তবে সেজন্য যে ফসলের গোড়া পুরোপুরি দায়ী নয়, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দেখুন কিছু শতাংশ হচ্ছে ফসলের গোড়া পোড়ানোর জন্য। বাকিটা হচ্ছে বাজি, কারখানা, ধুলোর মতো দূষণের জন্য। অবিলম্বে কোনও পদক্ষেপ করা হোক। প্রয়োজনে দু’দিনের লকডাউন বা সেরকম কিছু ভাবুন। মানুষ বাঁচবেন কীভাবে?’
সেইসঙ্গে শীর্ষ আদালত জানায়, দিল্লিতে ইতিমধ্যে বায়ুর মান খারাপ হয়ে গিয়েছে। আগামী দু’তিনদিনে তা আরও খারাপ হবে। সেই সময়ের মধ্যে কিছু অবশ্যই করতে হবে। যাতে মানুষ কিছুটা স্বস্তি বোধ করেন। জরুরি ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে সমাধানের বিষয়টি পরে দেখা যাবে। তারইমধ্যে কড়া সুরে বিচারপতি সূর্য কন্ত বলেন, ‘কৃষকদের দোষারোপ করা এখন ফ্যাশন হয়ে উঠেছে। দিল্লিতে তো বাজির উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। গত সাতদিন ধরে কী হচ্ছে? দিল্লি পুলিশ কী করছে?’
সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়েছে দিল্লি সরকারও। অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকারের আইনজীবীকে উদ্দেশ করে বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, ‘আপনারা এক সপ্তাহ আগে স্কুল খুলে দিয়েছেন। আপনারা ওদের (পড়ুয়াদের) দূষণের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। এটা কেন্দ্রের আওতাভুক্ত নয়। এটা দিল্লি সরকারের আওতায় আছে।’ উল্লেখ্য, সুইজারল্যান্ডের জলবায়ু সংক্রান্ত গোষ্ঠী ‘আইকিউ এয়ার’-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বের সবথেকে দূষিত শহর হল দিল্লি।
Be the first to comment