হাসিনাকে পেতে ইন্টারপোলে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি ঢাকার, নজর রাখছে ভারত

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক :-  দেশত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-সহ তাঁর মন্ত্রিসভার পলাতক সদস্যদের দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ‘রেড নোটিশ’ জারি করেছে মোল্লা মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারের আইনি উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। ইতিমধ্যেই ওই ‘রেড অ্যালার্ট’ ইন্টারপোলের কাছে পাঠানো হয়েছে। বিশ্বের প্রতিটি দেশে যাতে ওই ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা হয়, তার জন্যও ইন্টারপোলের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে। মূলত শেখ হাসিনাকে যাতে ভারত সরকার প্রত্যর্পণে বাধ্য হয়, তার জন্য এমন পথে হাঁটা হয়েছে।

ইতিমধ্যেই জুলাই-অগস্টের গণহত্যার জন্য দেশত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নেদারল্যান্ডসের হেগ-এ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) ইতিমধ্যেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী সহ একাধিক জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। আগামী ১৮ নভেম্বর অভিযুক্তদের আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু কন্যা-সহ পলাতক অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করার জন্য হাতে আর মাত্র এক সপ্তাহ সময় রয়েছে। সূত্রের খবর, ১৮ নভেম্বর পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের।
অন্যদিকে, এক্ষেত্রে ভারত সরকারের কী অবস্থান হবে, তা নিয়ে রবিবার বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে সরকারি ভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। এর আগে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যুতে ভারত সরকারের অবস্থান জানতে চাওয়া হলে ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্কর দাবি করেছিলেন, ভারত সরকার কূটনৈতিক ভাবে বিষয়টির সমাধান করবে। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একাধিক বার বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা ভারতেই আছেন। কিন্তু কতদিন তিনি ভারতে থাকবেন, সে নিয়ে কখনও কেন্দ্রের তরফে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশ সরকার ইন্টারপোলের মাধ্যমে হাসিনার প্রত্যর্পণ দাবি করলেও সহজে সেই দাবি মানা হবে না বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।
তবে ইন্টারপোল ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করলেও আদৌ পলাতকদের দেশে ফেরানো সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান পুলিশের শীর্ষ কর্তারা।
প্রসঙ্গত, গত আগস্টে হাসিনা দেশ ছাড়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে ২৩৩টি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার মধ্যে ১৯৮টি খুনের অভিযোগ। হাসিনা সহ ১৪৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
অন্যদিকে, বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রবিবার এই প্রথম রাজনৈতিক কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। ঢাকায় শহীদ নূর হোসেন চত্বর থেকে মিছিল শুরু করার কথা ছিল বাংলাদেশ সময় বেলা তিনটেয়। কিন্তু সেই মিছিল হতেই দিল না পুলিশ। সূত্রের খবর, শনিবার থেকেই পুলিশ শুরু করেছিল ধরপাকড়। আওয়ামী লীগের ১০ জন সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঢাকা সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’ বা বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছিল।
জানা যায়, রবিবার সকালে ঢাকায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে কয়েকজনকে মারধর করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ বিরোধী স্লোগান দিতে দিতে তাঁদের ওপর চড়াও হন একদল ক্ষিপ্ত জনতা। সূত্রের খবর, ওই জনতার মুখে ‘একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জবাই কর’ স্লোগান শোনা গিয়েছে। এছাড়াও ইউনুস সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা সজীব ভুঁইয়া তাঁদের সরকারের অবস্থানও স্পষ্ট করে দেন। সমাজ মাধ্যমে তিনি লেখেন, ‘গণহত্যাকারী কেউ কর্মসূচি করার চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’ এদিন অভিযোগ ওঠে, আক্রান্ত পক্ষেরই বেশ কয়েকজনকে পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের কর্মসূচির পাল্টা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকেও গণ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছিল রবিবারেই। দুপুর ১২টা থেকে শুরু হয়েছিল এই সমাবেশ। ভিড়ও হয়েছিল যথেষ্ট। সেখানে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া হতে থাকে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*