মঙ্গলবার সকালে বোটানিক্যাল গার্ডেনে সস্ত্রীক প্রাতঃভ্রমণে যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়৷ সেখানে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান জানান, বোটানিক্যাল গার্ডেনে কল্পতরু ভেবে একটি গাছকে জড়িয়ে তিনি শান্তিকামনা করেছেন৷ চেয়েছেন রাজনৈতিক হিংসার অবসান৷ পরে জানা গিয়েছে, রাজ্যপাল যে গাছটিকে জড়িয়ে ধরেছিলেন, সেটি আসলে আফ্রিকার বাওবাব গাছ৷
এদিন বোটানিক্যাল গার্ডেনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল শান্তির বার্তা দিয়েছেন। বলেন, “হিংসা, উগ্রতা দূর করে পশ্চিমবঙ্গ যেন একটা শান্তির স্থান হতে পারে, সেই লক্ষ্যে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। আপনারাও এগিয়ে আসুন।” সপ্তাহখানেক আগে রবীন্দ্র সরোবর লেকে মর্নিং ওয়াকে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেখান থেকে মমতা সরকারের উদ্দেশে বেশ নরমেগরমে কথা বলেন তিনি। একইসঙ্গে নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে জগদীপ ধনকড় বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে তো ম্যাডামের নির্দেশই শুনতে হবে৷”
রাজ্যে রাজনৈতিক সংঘর্ষে ব্যথিত অনুভব করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “কারও সঙ্গে কারও মতের অমিল হতেই পারে। কিন্তু তার জন্য হিংসা, সংঘর্ষ এসবের মধ্যে দিয়ে যাওয়া উচিত নয়। আমি যখন এসব শুনতে পাই, রাজ্যপাল হিসেবে খুব খারাপ লাগে। আমি সকলের কাছে আবেদন করতে চাই, শান্তির লক্ষ্যে কাজ করি। ধারাবাহিক হিংসার ঘটনা কোনও রাজ্যের নামে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সুন্দর একটি রাজ্য, সেখানে এমনটা কাম্য নয়।”
এদিন সকাল ৬টা ৫১ মিনিট নাগাদ বোটানিক্যাল গার্ডেনে এসে পৌঁছান। গার্ডেনের প্রধান ফটকের সামনে গাড়ি থেকে নেমে তিনি সকলের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। ফুলের স্তবক দিয়ে রাজ্যপালকে স্বাগত জানায় গার্ডেন কর্তৃপক্ষ। এরপর রাজ্যপালের কনভয় পৌঁছে যায় গার্ডেনের ভেতরে। পাঁচ শতাধিক বছরের প্রাচীন বটবৃক্ষ দেখে তিনি মুগ্ধ হয়ে যান। এরপর রাজ্যপাল চলে আসেন গঙ্গা তীরবর্তী গার্ডেনের অফিসের কাছে। সেখানে রাজ্যপাল বৃক্ষরোপণ করেন।
এদিন রাজ্যপাল গার্ডেনের সুদীর্ঘ ইতিহাসের কথা উল্লেখ করেন। গার্ডেনের মনোরম পরিবেশ নিয়েও সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এই গার্ডেনকে নাগরিকরাই পারেন রক্ষা করতে। তাঁদেরই সে দায়িত্ব।” এরপরই তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ শান্তির জায়গা। কোনওরকম রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা এখানে কাম্য নয়।”
তবে গার্ডেনের ভিতর তাঁর গাড়ি নিয়ে সটান ঢুকে পরায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে৷ কারণ গাছে ঘেরা পরিবেশ সুস্থ রাখতে যেখানে শুধুমাত্র ব্যাটারি চালিত গাড়ি নিয়েই প্রবেশ করা যায়৷ সেখানে পেট্রল চালিত গাড়ি নিয়ে তিনি কিভাবে ঢুকলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷
Be the first to comment