লিলুয়ায় একটি কলেজের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ৷ তাঁকে কালো পতাকা দেখানো হল৷ কালো ব্যানারে লেখা ছিল ‘রাজ্যপাল বা পদ্মপাল? রাজ্যপাল শেম শেম’। রাজ্যে কর্মসংস্থানের ‘অভাব’কে নিশানা করে শনিবার বিকালে একটি বণিকসভায় বক্তৃতা দেন রাজ্যপাল৷ বেঙ্গল ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের সভায় ধনকড় বলেন, ‘‘ইদানীং কোনও বন্ধুর বাড়িতে নিমন্ত্রণে গেলে দেখি, তরুণেরা কেউ এখানে নেই বললেই চলে। তাঁরা রাজ্যের বাইরে কাজ করছেন।’’
তারপরেই লিলুয়ায় অগ্রসেন কলেজের ১৬ তম প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল আসার আগে মাতোয়ালা চৌরাস্তার সামনে কয়েকশো মহিলা এবং পুরুষ কালো পতাকা, ব্যানার নিয়ে ধিক্কার দেখান ৷ যদিও ঠিক সময়েই অনুষ্ঠান মঞ্চে পৌঁছে যান রাজ্যপাল ৷ এরপর ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,‘‘ছাত্ররা দেশের ভবিষ্যত নির্মাণ করে৷ আমি ছাত্রছাত্রীদের কাছে আবেদন করি শিক্ষকদের প্রতি সম্মান জানাতে ৷’’
কালো পতাকা দেখানো নিয়ে পরে তিনি বলেন, ‘‘আমি যখন আসছিলাম এখানে বাইরে বিক্ষোভ দেখানো হল ৷ এ কেমন সমাজ? এ কেমন ভাবনা মানুষের? শিক্ষামন্দিরের বাইরে এ সব হওয়া উচিত নয়। রাজ্যের যে কোনও জায়গায় যখন কোনও অশান্তি হয়, প্রথম নাগরিক হিসাবে আমার হৃদয়ে চোট লাগে।’’
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিনই হাওড়া জেলা স্কুলের অনুষ্ঠানে বলেন, ‘‘রাজ্যপাল পদ্মপালের মতোই আচরণ করছেন। এই নামে ডাকলেও কোনও আপত্তি নেই। ওঁর আচরণ নিত্যযাত্রীর মতো হয়ে গিয়েছে। রোজ যে ভাবে রাজভবন থেকে বেরিয়ে পড়ছেন, তাতে নিত্যযাত্রীই বলা যায়।’’
এদিন, রাজ্যে কর্মসংস্থান নিয়ে ধনকড় যে কটাক্ষ করেছেন তা নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া, ‘‘রাজ্যপালের জানা উচিত, কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যানেই এ রাজ্যে বেকারত্ব ৪০ শতাংশ কমেছে। কর্মসংস্থান না থাকলে এটা হয় না, এটুকু না বোঝার কথা নয়। আমাদের রাজ্যে অন্যান্য প্রদেশ থেকেও মানুষ আসেন কাজ করতে। বাংলা কাউকে ফেরায় না।’’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছা শুক্রবারই প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল। এ দিন আর এক ধাপ এগিয়ে তিনি জানান, জিএসটি নিয়ে এক সময় সমস্যা হয়েছিল। তখন তাঁর ‘পুরনো বন্ধু’ অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র রাজভবনে এসে কথা বলার পরে সমাধান সূত্র বেরোয়। এর পরেই রাজ্যপালের দাবি, এই ভাবে কথা বলে নানা সমস্যা মিটিয়ে ফেলা সম্ভব।
Be the first to comment