রাজ্য সরকার ও রাজ্যপালের সংঘাত নতুন মাত্রা পেলো ৷ এবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের পদত্যাগ দাবি করলেন তৃণমূল বিধায়করা ৷ তাও আবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে ৷ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, এই ঘটনা নজিরবিহীন ৷ রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাতের নজির রয়েছে ৷ তবে বিধানসভা থেকে রাজ্যপালের পদত্যাগের দাবি তোলার দৃষ্টান্ত খুব কমই দেখা গেছে ৷
রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের সংঘাতের ছবি সামনে আসছে প্রতিদিনই ৷ চলতি শীতকালীন অধিবেশনেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভা কক্ষে দাঁড়িয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে আক্রমণ করেন ৷ যা নিয়ে সমালোচনা কম হয়নি ৷ রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান কেন রাজ্যপালকে আক্রমণ করবেন? এই প্রশ্ন তুলেছিল বিরোধীরা ৷ শুধু মুখ্যমন্ত্রীই নন, পার্থ চট্টোপাধ্যয় সহ তৃণমূলের একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতাও রাজ্যপালের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ৷
রাজ্যপালও চুপ করে থাকেননি ৷ শিক্ষা, স্বাস্থ্য সহ একাধিক ইশুতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক আক্রমণ শানিয়েছেন ৷ এই পরিস্থিতিতে আজ রাজ্যপালের পদত্যাগ দাবি করে বসলেন তৃণমূল বিধায়করা ৷ বিধানসভায় গান্ধি মূর্তির পাদদেশে দাঁড়িয়ে রাজ্যের মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু, তাপস রায় ও তৃণমূলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ এই দাবি তোলেন ৷ পরে আরও বিধায়করা যোগ দেন ৷
কেন রাজ্যপালের পদত্যাগের দাবি তুললেন তৃণমূল বিধায়করা? তাঁদের অভিযোগ, SC, ST বিলে সই করেননি জগদীপ ধনকড় ৷ ফলে আটকে রয়েছে কাজ ৷ রাজ্য সরকার এগোতে পারছে না ৷ প্রতিদিনের মতো আজ বিধানসভায় অধিবেশন বসেছিল ৷ অধিবেশনের শুরুতেই রাজ্যপালের ভূমিকার সমালোচনা করেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ ৷ তিনি জানান, SC ও ST বিলে রাজ্যপাল অনুমোদন দিচ্ছেন না ৷ ফলে বিধানসভায় তা পেশ করা যাচ্ছে না ৷ তাঁর মতে, “বিলে সই না করে বিধানসভার অধিকার খর্ব করা হচ্ছে।”
রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও ৷ তিনি বলেন, “এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিলের অনুমোদন নানা প্রশ্ন তুলে আটকে রেখেছেন রাজ্যপাল ৷ তাঁর প্রশ্ন থাকতেই পারে। কিন্তু আমরাও তাঁকে সহযোগিতা করছি ।” পাশাপাশি রাজ্যপাল যথাযথ সাহায্য করছেন না বলে অভিযোগ করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও ৷ অধিবেশনে তিনি বলেন, রাজ্যপাল গণপিটুনি বিলের উপর যে জবাব চেয়েছিলেন বিধানসভার তরফ থেকে তা জবাব দিয়েছে। রাজ্যপালকে সবরকম সহযোগিতা করা হচ্ছে। উনি যখন যেটা বলছেন, আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি। কিন্তু তারপরও বিধানসভা রাজ্যপালকে সহযোগিতা করছে না বলে অভিযোগ উঠছে ৷”
Be the first to comment