CAA ও NRC-এর প্রতিবাদে শুক্রবার থেকেই বিক্ষোভের নামে তাণ্ডব শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। রেল লাইন ও জাতীয় সড়ক অবরোধের পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বাস, ট্রেন ও স্টেশনে। ভাঙচুর করা হয়েছে যানবাহনও। হামলা হয়েছে পুলিশের উপর। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারকে সক্রিয় হতে বললেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। যে দুষ্কৃতীরা বিক্ষোভের নামে তাণ্ডব চালাচ্ছে, তাদের দ্রুত চিহ্নিত করার জন্য আবেদন জানালেন তিনি।
শুক্রবার সায়েন্স সিটিতে বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ আয়োজিত ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল মেগা ট্রেড ফেয়ার ২০১৯-২০২০ উপলক্ষে সেখানে আসেন রাজ্যপাল। সেখানে রাজ্যপাল বলেন, রাজ্যের মানুষের কাছে শান্তি সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আবেদন করছি। যে দুষ্কৃতীরা হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা করছে তাদের রুখে দিন। যেটা হয়েছে সেটা আমায় ও পশ্চিমবঙ্গের সব মানুষকে কষ্ট দিয়েছে। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা খুব দুর্ভাগ্যজনক। আমি সবাইকে এবং রাজ্য সরকারকে সক্রিয় হওয়ার জন্য আবেদন করছি। দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করুন।
নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন, ২০১৯ নিয়ে রাজ্যপাল বলেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী এখন আর বিল নয়, এটা এখন আইন। এই আইন সংসদে পাশ হয়েছে। রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করেছেন। গেজেটে প্রকাশিত হয়েছে। আমি হাতজোড় করে সবার কাছে আবেদন করছি, আপনাদের যদি মনে হয় কিছু ঠিক নয়, সংবিধান অনুসারে আপনাদের একটা পথ খোলা আছে। কিন্তু রাস্তায় নেমে, ট্রেন, বাস, রেল স্টেশন পোড়ানো কোনও পথ নয়। হিংসা শুধু সমস্যা তৈরি করে। আমি সবার কাছে আবেদন করব, এলাকায় শান্তি বজায় রাখার জন্য অহিংস পদ্ধতিতে সাহায্য করুন এবং দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করুন। মূল অভিযুক্তদের চিহ্নিত করুন যারা আমাদের সামাজিক শৃঙ্খলাকে ভেঙে দিচ্ছে। সংসদ আমাদের একটা আইন দিয়েছে, যেটা গোটা দেশেই প্রযোজ্য।
সাংবাদিকদের সামনে রাজ্যপাল এই সমস্যার রাজনীতিকরণ না করার আবেদন জানান। তিনি বলেন, দয়া করে এই ইস্যুর রাজনীতিকরণ করবেন না। এটা এমন ইস্যু নয় যেটা নিয়ে মানুষ বা রাজনৈতিক দল নিজেদের সুবিধা-অসুবিধার কথা ভাববে। যখনই আমরা আইনকে নিজের হাতে তুলে নেব তখনই আমরা গণতন্ত্রের হৃদয়, আত্মার ক্ষতি করবো। দুষ্কৃতী-অসামাজিকরা নিজেদের ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য সিস্টেমকে তছনছ করে দিচ্ছে। আমাদের একসঙ্গে এটা রুখে দিতে হবে। শুক্রবার ও আজকের ঘটনা আমার কাছে অত্যন্ত বেদনাদায়ক।