রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের মধ্যে ফের মনকষাকষি চরমে। রাজ্য মন্ত্রিসভার তৈরি করা বাজেট বক্তৃতার খসড়ায় নিজের বক্তব্য সংযোজন করার দাবি জানিয়েছেন জগদীপ ধনকড়। একইসঙ্গে রাজ্য মন্ত্রিসভার পাঠানো খসড়ায় কিছু তথ্য বাদ দেওয়ারও কথা বলেছেন ধনকড়। রাজ্যপালের এহেন প্রস্তাব মমতা সরকার পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছে বলে খবর। এদিন বিধানসভায় গিয়ে লিখিত ভাষণ পাঠ করেন রাজ্যপাল।
প্রসঙ্গত, আজই পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বাজেট অধিবেশন শুরু। রীতি মেনে রাজ্যপালের ভাষণের মাধ্যমেই রাজ্য বাজেট অধিবেশনের সূচনা হয়। রাজ্যপালের বক্তব্যের খসড়া তৈরি করে রাজ্য সরকার। সেই খসড়া পাঠ করেই ভাষণ দেন রাজ্যপাল। এবার এ প্রসঙ্গে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় জানান, সরকারের প্রস্তাবিত খসড়ার সঙ্গে নিজের বক্তব্যও তিনি তুলে ধরবেন। আর এ নিয়েই আপত্তি জানিয়েছে মমতা সরকার।
বাজেট বক্তৃতায় তাঁর পরামর্শ দেওয়ার অধিকার রয়েছে বলে কিছুটা জোর দিয়ে রাজ্যপাল বলেন, “রাজ্য সরকার নিয়মমাফিক তাঁদের নীতি, ভাবনা রেখেন রাজ্যপালের ভাষণে এবং তা যথাযথভাবেই আমার কাছে পাঠানো হয়েছে। রাজ্যপাল এবং সাংবিধানিক প্রধান হিসাবেও আমার পরামর্শ দেওয়ার অধিকার রয়েছে। আমার কাছে যা পাঠানো হয়েছে তা আমি খতিয়ে দেখছি।”
রাজ্যপালের এহেন বক্তব্যর সমালোচনা করে রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “আমার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বলছে কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল রাজ্য বাজেটে হস্তক্ষেপ করেন না। হতে পারে তিনি আমাদের চেয়ে বেশি জ্ঞানী এবং সে কারণেই এ জাতীয় মন্তব্য করেছেন। তবে রাজ্য সরকারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব তৈরি করতে তাঁকে এখানে নিয়োগ করা হয়েছে। রাজ্য সরকার সংবিধান এবং সংসদীয় গণতন্ত্র অনুযায়ী কাজ করছে।” বিজেরি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘রাজ্যপালের সঙ্গে যথাযথ ব্যবহার করছে না রাজ্য সরকার’’।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে কেরালা বিধানসভায় সিএএ বিরোধী প্রস্তাব পাঠ করার সময় সে রাজ্যের রাজ্যপাল বলেছিলেন, এই বক্তব্যের সঙ্গে তিনি সহমত নন, এটা সরকারের। এই প্রেক্ষিতে বাংলার রাজ্যপালের এহেন প্রস্তাব তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। এদিকে, আইনশৃঙ্খলা-সহ একাধিক ইস্যুতে মমতা সরকারের সমালোচনায় মুখর হতে দেখা গিয়েছে ধনকড়কে। যার জেরে প্রথম থেকেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। সেই প্রেক্ষাপটে রাজ্যপালের এহেন পদক্ষেপ নয়া মাত্রা এনে দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।
Be the first to comment