মঙ্গলবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনায় দু’টি প্রশাসনিক বৈঠকে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ৷ কিন্তু বৈঠকে গরহাজির ছিলেন জেলার জনপ্রতিনিধিরা। ছিলেন না কোনও মন্ত্রী, বিধায়ক ৷ এমন কী, জেলাশাসকও অনুপস্থিত ছিলেন বৈঠকে ৷ আর তাতেই ক্ষোভপ্রকাশ করেন রাজ্যপাল ৷ আজ মালঞ্চ ও ধামাখালিতে প্রশাসনিক বৈঠক করার কথা ছিল তাঁর ৷ জেলাশাসক না থাকায় সেখানে রাজ্যপালকে অভ্যর্থনা জানাতে আসেন সংশ্লিষ্ট জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ADM) সুবীর কুন্থাম ৷
এদিন সকাল ৯টা নাগাদ সড়কপথে সন্দেশখালির ধামাখালিতে পৌঁছান রাজ্যপাল। ধামাখালি সরকারি গেস্ট হাউসে রাজ্যপালকে পুলিশের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। তারপর তিনি বিএসএফ-এর বোটে করে টি-জংশনে যান। সেখানে গিয়ে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে তিনি কথা বলেন। সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদের জলঙ্গিতে BGB-এর গুলিতে ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যুর প্রসঙ্গ নিয়েও তিনি কথা বলেন। রাজ্য সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেন।
সেখানে জেলার কোনও মন্ত্রী বা বিধায়ক উপস্থিত ছিলেন না ৷ এমন কী, বসিরহাটের সাংসদ নুসরত জাহান ও সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তাঁরাও অনুপস্থিত ছিলেন বৈঠকে ৷ রাজ্যপাল BSF-এর আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সজনেখালিতে বৈঠকের জন্য রওনা দেন ৷ ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল বলেন, আমি জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবো বলেছিলাম। কিন্তু জেলাশাসক চারদিন পরে জানাচ্ছেন, রাজ্য সরকারের অনুমতি মেলেনি। রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়া তাঁরা নাকি এক পাও এগোবেন না। তাঁরা যুক্তি দেখাচ্ছেন, মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন। জনপ্রতিনিধিরা তাঁর সঙ্গে রয়েছেন। এটা ভীষণ উদ্বেগের ব্যাপার।
উল্লেখ্য, ১৭ অক্টোবর রাজভবন থেকে চিঠি দিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠকের কথা জানানো হয় ৷ পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, আজ সকালে রাজ্যপাল ধামাখালি ও মালঞ্চতে বৈঠক করতে যান ৷ কিন্তু সেখানে জেলাশাসক অনুপস্থিত থাকায় ক্ষুব্ধ হন রাজ্যপাল ৷ এবিষয়ে সুবীর কুন্থাম রাজ্যপালকে জানান, তাঁর অফিস থেকে চিঠি দিয়ে আজকের মিটিংয়ে উপস্থিত থাকার জন্য জেলাশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ৷ জেলাশাসক কেন আসতে পারেননি অতিরিক্ত জেলাশাসকের কাছে জানতে চান রাজ্যপাল ৷
সুবীর কুন্থাম রাজ্যপালকে বলেন, জেলাশাসক চৈতালী চক্রবর্তী অসুস্থ রয়েছেন, তাই আসতে পারেননি ৷ রাজ্যপালের অনুষ্ঠানে যাওয়ার সাংবিধানিক ছাড়পত্র নিতে হয় রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ৷ একথা শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল ৷ অতিরিক্ত জেলাশাসক সুবীর কুন্থামকে রাজ্যপালকে জানান, তিনি রাজ্য সরকারের অধীনস্থ নন ৷ জেলাশাসক রাজ্য সরকারের অনুমতি নেবেন কি নেবেন না সেটা তাঁর বিষয় ৷ তবে, আজকের বৈঠকে জেলাশাসকের না আসার কারণ নিজে খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যপাল ৷ সমগ্র বিষয়টি দিল্লির নজরে আনবেন বলেও ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন তিনি ৷ সহকারি জেলাশাসক, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক ও BSF-এর IG-এর সঙ্গে দেখা করে বৈঠক সেরেছেন রাজ্যপাল ৷ রাজ্যপালের গুরুত্বকে অমর্যাদা করা হচ্ছে বলেও রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশককে জানান তিনি ৷
মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ সফরে থাকায় অনেকেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন ৷ তাই তাঁরা রাজ্যপালের বৈঠকে আসতে পারেননি বলেও জানান সুবীর কুন্থাম ৷ ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল রাজ্য সরকারকেও এই বিষয় নিয়ে কৈফিয়ৎ তলব করবেন বলে জানিয়েছেন ৷
Be the first to comment