একমাস টানা নয়, দার্জিলিং থেকে মাঝে রাজ্যপালের ফেরার কথা কলকাতা
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের এক মাসের দার্জিলিং সফর নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট। সাম্প্রতিক অতীতে কোনও রাজ্যপাল টানা একমাস দার্জিলিঙে কাটিয়েছেন বলে খেয়াল করতে পারছেন না রাজভবনের সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত থাকা অফিসাররা। যদিও রাজ্যপালের যে সুচি তৈরি হয়েছে তাতে নভেম্বরের মাঝামাঝি একবার তার কলকাতায় ফেরার কথা। অতি জরুরী কিছু কাজ সেরেই অবশ্য ফের তিনি চলে যাবেন দার্জিলিঙে রাজভবনে।
এর আগে সাম্প্রতিক অতীতে রাজ্যপাল হিসেবে নুরুল হাসানের দার্জিলিংয়ের যাতায়াতের সবচেয়ে বেশি অভ্যাস ছিল। রাজভবনের এক অফিসার বলেন, বছরে দুবার করে গিয়ে মোট অন্তত একমাস তিনি দার্জিলিঙে কাটিয়ে আসতেন। রাজ্যপাল থাকাকালীন গোপালকৃষ্ণ গান্ধীও বছরে চার- পাঁচ বার দার্জিলিঙে গিয়েছেন। এমন উদাহরন আছে। কিন্তু তাদের সঙ্গে বর্তমান রাজ্যপালের এই সফরের ফারাক একটি, তা হলো তিনি টানা একমাস দার্জিলিঙে কাটানোর কথা জানিয়েছেন। আর যাচ্ছেন প্রায় প্রাক শীতে।
এই সফর নিয়ে আলোচনার একটা অন্যতম কারণ হিসেবে অনেকেই মনে করছেন, তার এই যাওয়ার সময়টা। কারণ ইতিহাস বলছে, দার্জিলিঙে রাজভবন তৈরি হয়েছিল মূলত গরমের সময় রাজ্যপালকে ঠান্ডা থাকার সুযোগ করে দিতে। তাই ১৮৭৭ সালে কোচবিহারের রাজাদের থেকে ওই ভবনটি কিনে নেওয়া হয়েছিল। সে সময় গভর্নর গরমের সময় অন্তত দু সপ্তাহ টানা দার্জিলিঙে থাকতেন। আর তাদের সেখানে কাজ করার জন্য বিশাল সংখ্যক সরকারি কর্মচারী এবং ফাইলপত্র বয়ে নিয়ে যাওয়া হতো সেখানে। কলকাতার প্রচন্ড গরম থেকে বাঁচতে গভর্নর দার্জিলিংয়ের ঠান্ডা য় ছুটির মেজাজে থেকে কাজকর্ম করতেন।
যদিও ১৯৩৪ সালে ভয়াবহ ভূমিকম্পে এই রাজভবনের একটা বড় অংশের ক্ষতি হয়। তারপরে আবার নতুন করে গড়ে তোলা হয় বাকি অংশ। আর যখন দার্জিলিঙে রাজ্যপালদের জন্য এমন ব্যবস্থা হয়নি, তখন প্রচন্ড গরম থেকে বাঁচতে রাজ্যের রাজ্যপাল চলে যেতেন ডায়মন্ড হারবার বা ফলতা য় নদীর ধারে। সেখানেই সরকারি ব্যবস্থাপনায় কয়েকদিন থেকে ফের তারা ফিরতেন কলকাতায়।
এবার রাজ্যপালের এই দার্জিলিং সফরের জন্য এখন সাড়া পড়ে গিয়েছে কর্মীদের মধ্যে। রাজ্যপাল যেদিন দিল্লি যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে, সেদিনই কলকাতা রাজভবন থেকে সরকারি অফিসারদের একটি বড় দল চলে গিয়েছেন দার্জিলিঙে। সেখানকার যাবতীয় ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখে তারা আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন রাজ্যপালের সফরের।
Be the first to comment