রাজভবনের ওপর নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে, বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “আমি আপনাদের সবাইকে বলতে চাই যে রাজভবনে নজরদারি চালানো হচ্ছে। এটি রাজভবনের পবিত্রতা লঙ্ঘন করে।”
রাজ্যপাল বলেন, রাজভবনের কোনও কর্মচারী রাজ্যপালের কথা শুনবে না, এমন আচরণ কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। তাঁর প্রশ্ন, রাজভবনের গোপন তথ্য কী করে রাজ্য প্রশাসনের সবোর্চ্চ স্তরে গেল?
রাজ্যপাল বলেন, “যে এই কাজ করুন না শাস্তি পাবেন। তদন্ত শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নাম না করে রাজ্যপালের কটাক্ষ, নবান্নের কোনও গোপন তথ্য এভাবে এলে আমি সতর্ক করতাম। গত এক বছরের বেশি সময় ধরে রাজ্যপাল-নবান্ন বিবাদ একাধিকবার তুঙ্গে উঠেছে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, সেই বিবাদে নতুন এবার মাত্রা যোগ করল ‘নজরদারি’র অভিযোগ।
এদিকে, স্বাধীনতা দিবসের বিকেলে রাজভবনে চা-চক্রে মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতি নিয়েও সরব হয়েছেন রাজ্যপাল। এপ্রসঙ্গে রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যপাল বলেন, “আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করে বলেছিলাম সম্পূর্ণ কোভিড প্রোটোকল মেনে অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে। উনি খুবই বাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। এমনটা কোনও জায়গায় কখনও এর আগে হয়নি। আমি বাকরুদ্ধ। উনি যখন এসেছেন তখন কাজে ব্যস্ত ছিলাম আমি।”
অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক মর্যাদা অসম্মানিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। উল্লেখ্য, শনিবারই রাতের দিকে রাজ্যপাল রাজভবনের সেই অনুষ্ঠানের একাধিক ছবি টুইট করেছিলেন। সেই ছবিতে একটা ফাঁকা চেয়ারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন রাজ্যপাল। ছবিতে দেখা গিয়েছে, সেই চেয়ারে মুখ্যমন্ত্রীর নাম উল্লেখ করা।
সেই ফাঁকা চেয়ার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে রাজ্যপাল বলেন, “এই ফাঁকা চেয়ার মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতির চিহ্ন বহন করছে। এই অনুপস্থিতি মোটেও রাজ্যের ইতিবাচক সংস্কৃতির সৌজন্য বহন করে না।” যদিও, শনিবার সকালে রেড রোডের অনুষ্ঠানের পর রাজভবনে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি, কলকাতা পুলিশের কমিশনার-সহ অন্যরা। কোভিড-১৯ সংক্রমণ এবং নিয়ন্ত্রণবিধি মেনে তিনি সন্ধ্যায় আসতে পারবেন না। তাই সকালে এই ঝটিকা সফর করে গেলেন। সংবাদমাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তারপরেও শনিবার সন্ধ্যার অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন রাজ্যপাল।
Be the first to comment