বুধবার কাক ভোর থেকেই ময়দানে নেমে পড়েছিলেন বিজেপি কর্মীরা। রাস্তায় থেকে বনধ সফল করার ‘পার্টি কল’ বলে কথা! ইসলামপুরের ঘটনার প্রতিবাদ জানানো তো বটেই, বিজেপি-র রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি পরীক্ষা। আর সেই পরীক্ষা দিতে গিয়ে কোথাও শাসক দলের কর্মীদের হাতে ঠ্যাঙানি খেতে হয়েছে। কোথাও আবার কলার ধরে পুলিশই এসে ভ্যানে করে তুলে নিয়ে গেছে।
কিন্তু জানেন কি, কোথাও আবার এই পুলিশই গান্ধীগিরি করেছে? যেমন জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি। সেখানে বনধ সমর্থকদের ‘গ্রেফতার’ করে থানায় এনেছে। এনে আবার দুপুর বেলা পাত পেড়ে খাওয়ালো পুলিশই।
সাত সকালেই ধূপগুড়ির মিলপাড়া এলাকায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ শুরু করে বিজেপি কর্মীসমর্থকরা। সোনাখালি এলাকায় প্রাইভেট গাড়ি ভাঙচুর চালানোরও অভিযোগ ওঠে বনধ সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থলে গিয়ে বিজেপি-র ৭৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে ধূপগুড়ি থানার পুলিশ। নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। কিন্তু লকআপে না ঢুকিয়ে থানার উঠোনেই বসতে দেওয়া হয় গেরুয়া শিবিরের লোকজনকে। তাঁরা তো বসেই ছিলেন। কিন্তু দুপুরের আগেই পুলিশের কথা শুনে অবাক হয়ে যান বিজেপি কর্মীরা। পুলিশের এক কর্মী এসে জিজ্ঞেস করেন, “সবাই দুপুরে ভাত খাবেন তো?” প্রথমটায় অনেকে ইতস্তত করলেও পরে মুখ ফুটে ‘হ্যাঁ’ বলেই ফেলেন। কেউ আবার বলেন, ভাত নয় অন্য কিছু। যার যেমন পছন্দ তাঁর পাতে তেমন খাবার। সৌজন্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের পুলিশ।
মেনুতে কী কী ছিল?
এক বিজেপি কর্মী বলেন, যাঁরা ভাত খেয়েছেন তাঁদের জন্য ছিল গরম ভাতের সঙ্গে মুগ ডাল, কড়কড়ে আলুভাজা, আর আলু-ফুলকপির ডালনা। আর যাঁরা ভাত খাননি তাঁদের জন্য একটু সংক্ষিপ্ত। স্লাইস পাউরুটি আর আর রসের মিষ্টি।
যে পুলিশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবেন বলে রাস্তায় নেমেছিলেন বিজেপি কর্মীরা, দুপুর গড়াতে সেই পুলিশেরই আদর আপ্যায়নে যার পর নাই খুশি তাঁরা
সকাল থেকে অবরোধ করে, গাড়ির কাঁচ ভেঙে ক্লান্ত শরীরে দুপুরে যদি এক মুঠো গরম ভাত জোটে, এর বেশি আর কী লাগে!
কিন্তু মেনুতে নিরামিষ কি সচেতনভাবেই করা? বিজেপি-র নীতি-আদর্শ বজায় রাখার জন্য? এ ব্যাপারে অবশ্য মৃদু হাসি ছাড়া আর কোনও জবাব দেননি পুলিশ আধিকারিকরা।
Be the first to comment