বছর দুয়েক ধরে তাঁদের রাজনৈতিক অবস্থান ধোঁয়াশায়। তৃণমূল শিশির অধিকারী এবং দিব্যেন্দু অধিকারীর সাংসদ পদ খারিজ করার দাবি নিয়ে লোকসভার অধ্যক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছে। যদিও এতদিন তাঁরা তৃণমূলে আছেন বলেই দাবি করে আসছিলেন। কিন্তু, শনিবার দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিলেন কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী এবং তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী।
তাঁদের সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে বিরোধীরা মার্গারেট আলভার নাম উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে বেছেছে, এই কথা জানিয়ে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তৃণমূল। সেই সিদ্ধান্ত প্রতিটি সাংসদকে জানিয়ে দিয়েছিল দল। শিশির-দিব্যেন্দুকেও চিঠি দিয়ে ভোট না দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
জল্পনা তৈরি হচ্ছিল। যার প্রথম কারণ ছিল, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দিন। যেদিন দলের সব সাংসদ দিল্লিতে না গিয়ে কলকাতায় ভোট দিয়েছিলেন। সেটাও করা হয়েছিল দলীয় সিদ্ধান্ত মেনেই। ব্যতিক্রম ছিলেন কাঁথি এবং তমলুকের ওই দুই সাংসদ। শিশির এবং দিব্যেন্দু দুই জনই দিল্লিতে গিয়ে ভোট দেন। জল্পনার দ্বিতীয় ধাপ ছিল শুক্রবার। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে কাঁথির সাংসদ বলেছিলেন, ভোট দিলেও দেখতে পাবেন, না দিলেও দেখতে পাবেন।
জল্পনার তৃতীয় ধাপ অবশ্যই উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে জগদীপ ধনখড়ের নাম ঘোষণা। বিজেপি ধনখড়ের নাম ঘোষণা করার পর দিব্যেন্দুর প্রতিক্রিয়া ছিল, উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে ধনখড়ের বিকল্প আর কেউ হতেই পারেন না।
শনিবার দিল্লিতে রয়েছেন তৃণমূল প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের নির্দেশ মেনে কোনও সাংসদ সংসদে যাননি। কিন্তু, বেলার দিকে সংসদে ভোট দিতে যান শিশির এবং দিব্যেন্দু। এ ভাবে দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে ভোট দেওয়ার পর কি তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে? এই প্রশ্নের উত্তরে লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ইতিমধ্যেই তাঁদের দুই জনের সাংসদ পদ খারিজের আবেদেন জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি রয়েছে প্রিভিলেজ কমিটিতে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কাজটা বাকি রয়েছে। তবে এটা ঠিক, যতদিন না চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হচ্ছে, ততদিন শিশির এবং দিব্যেন্দু তৃণমূলের সাংসদ হিসেবেই রয়েছেন।
তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, ওঁরা দুই জনই বহু দিন ধরে বিজেপির বন্ধু হিসেবে কাজ করেছেন। আজ তা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে গেল।
অন্যদিকে, বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছে বিজেপিও। দলের অন্যতম সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ভোট দেওয়া গণতান্ত্রিক অধিকার। সাংসদ হিসেবে তাঁরা নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছেন।
Be the first to comment