আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস মতোই রাজ্যের দিকে ধেয়ে আসছে সুপার সাইক্লোন আমফান। আজ বিকেলের মধ্যেই দিঘা এবং সুন্দরবনে আছড়ে পড়বে এই ঘূর্ণিঝড়। স্থলভাগে আসার পর উত্তর এবং উত্তরপূর্বমুখী হয়ে কলকাতার পূর্বভাগ ঘেষে বাংলাদেশের পথ ধরবে এই ঝড়। এই মুহুর্তে দিঘা থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে আমফান। এদিকে ঘূর্ণিঝড় আসার প্রাক্কালেই রাজ্যের একাধিক জেলায় শুরু হয়ে গিয়েছে ঝড় বৃষ্টি। প্রবল বেগে বইছে হাওয়াও। দিঘা উপকূলে প্রাইয় ১০৩ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় বইছে ঝড়। শুরু হয়েছে জলচ্ছ্বাসও।
দিঘায় বাড়ছে জলস্তর। যতই এগিয়ে আসছে আমফান ততই বাড়ছে ঝড়ের দাপট। বাড়ছে গঙ্গার জলস্তরও। ইতিমধ্যেই উপকূলবর্তী এলাকায় প্রবল বেগে শুরু হয়েছে ঝড়। এই ঝড় মোকাবিলা করতে রাজ্যে হেল্পলাইন চালু করেছে মমতা বন্দ্যোপাধায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার। সেগুলি হল- ২২১৪-৩৫২৬, ২২১৪ ১৯৯৫। এছাড়াও রয়েছে টোল-ফ্রি নম্বর-১০৭০। নবান্নে ২৪ ঘন্টার জন্য খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম। এদিকে রাজ্যকে এই আমফান মোকাবিলা করার জন্য সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মঙ্গলবার তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে বিষয়টি নিয়ে কথাও বলেন।
রাজ্যের এই অবস্থায় ক্রমশ বাড়ছে হাওয়ার বেগ।আমফান আছড়ে পড়ার সময় বাতাসের গতিবেগ হতে পারে প্রতি ঘণ্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার। যা বেড়ে তা পৌঁছতে পারে ১৮৫ কিলোমিটারের আশপাশে। আমফানের জেরে কলকাতা, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া এবং নদিয়াতেও ভালই প্রভাব পড়বে। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে। কলকাতায় ঝড়ের গতিবেগ হতে পারে প্রতি ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশা সরকারের তরফে ঝুঁকিপ্রবণ এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কয়েক লক্ষ মানুষকে। এছাড়াও আমফান ঘটিত বিপর্যয়ের মোকাবিলায় দুই রাজ্যে মোতায়েন হয়েছে ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (NDRF)-এর ৪১টি বাহিনী।
আবহবিদদের একাংশের মতে, আমফানের তাণ্ডবলীলা ভয়ঙ্কর হতে পারে। ২০০৯ সালে আয়লার ধ্বংসলীলা দেখেছে বাংলা। কিন্তু আয়লার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ১১২ কিমি। গত নভেম্বরে বুলবুলের তাণ্ডবেরও সাক্ষী থেকেছে বাংলার একাংশ। তবে, আয়লা ও বুলবুলের থেকেও ভয়ঙ্কর হতে পারে আমফান। একথা মঙ্গলবারই বলেছেন মুখ্যমন্ত্রীও।
Be the first to comment