নিজ ভূমেই জোর ধাক্কা খেলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, পড়ুন!

Spread the love
গত বছর বিজয়া দশমীর দিন তির-ধনুক হাতে তিনি হুঙ্কার ছেড়েছিলেন বাংলার শাসক দলের বিরুদ্ধে। কিন্তু এ বার,উনিশের ভোটের যখন আর ছ’মাসও বাকি নেই, নিজ ভূমেই জোর ধাক্কা খেলেন বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। খড়্গপুরে রাবণ দহনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেলেন না স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্য বিজেপি সভাপতি! পরিবর্তে শুক্রবার রাবণ ময়দানে ঐতিহ্যশালী রাবণ দহনের অনুষ্ঠানে ধনুক থাকবে দুই মেদিনীপুর মিলিয়ে শাসক দলের অবিসংবাদী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর হাতে।
ঘটনাচক্রে দিলীপ ঘোষ এবং শুভেন্দু, দু’জনেই অবিভক্ত মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র। দিলীপবাবুর জন্ম গোপীবল্লভপুরে, আর শুভেন্দুর কাঁথিতে। খড়্গপুরের রাবণ দহনের মহিমার সঙ্গে তাঁরা দু’জনেই বহুদিন থেকে পরিচিত।
বস্তুত, রেলশহর খড়্গপুরের চরিত্র বাংলার অনেক শহরের থেকে অন্যরকম। বিহার, ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তর ভারতের একাধিক রাজ্যের বাসিন্দাদের জন্য খড়্গপুরে অবাঙালি জন সংখ্যা বিপুল। হিন্দি ভাষাভাষি এলাকার মতই খড়্গপুরে দশহরার দিন রাবণ দহন একটা বড় আকর্ষণ। ওই দিন শহরের রাবণ ময়দানে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়। সেই উৎসবে সামিল হন স্থানীয় বাঙালিরাও। এবং তা বহুদিনের ঐতিহ্য। খড়্গপুরের দশেরা উৎসব কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত শুক্রবারের অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন শুভেন্দু অধিকারী। এছাড়াও উপস্থিত থাকার কথা পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক পি মোহন গান্ধী, পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া, রেলের ডিভিশনাল ম্যানেজার কেআরকে রেড্ডি এবং জেলা পরিষদের সভাপতি অজিতকুমার মাইতির।
২০১৬ সালে দিলীপবাবু খড়্গপুর বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন। সে বছর এবং গত বছর দশহরার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তিনি। কিন্তু এ বারই অন্যরকম ঘটে গেল!
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, আপাত দর্শনে এর ভিতরে কোনও রাজনীতি নেই। কিন্তু ভাল করে দেখলে বোঝা যাবে তা ভালমতোই রয়েছে। তৃণমূলের দখলে থাকা কোনও এলাকায় বিজেপি নেতা পুজো উদ্বোধন করছেন, তা যেমন বিষ্ময়কর এবং শাসক দলের জন্য অস্বস্তিকর, এ ক্ষেত্রেও তাই। মোদ্দা ঘটনা এই যে, খড়্গপুরের বিধায়ক হলেও স্থানীয় ব্যাপার-স্যাপারে দিলীপবাবুর প্রভাব দুর্বল।
এ ব্যাপারে তৃণমূলের স্থানীয় এক নেতা বৃহস্পতিবার বলেন, পশ্চিম মেদিনীপুরের রাজনীতিতে পরিবহণ ও পরিবেশ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর প্রভাব বহু দিন থেকেই রয়েছে। এক সময় জেলার পর্যবেক্ষক ছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে মুকুল রায়ের পরামর্শে তাঁকে পশ্চিম মেদিনীপুরের পর্যবেক্ষক পদ থেকে সরিয়ে দেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে জেলার যাবতীয় দেখভালের দায়িত্ব চলে যায় তৎকালীন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের হাতে। ফলে শুভেন্দুও তখন থেকে মেদিনীপুরের ব্যাপারে নিজেকে কিছুটা গুটিয়ে নিয়েছিলেন। ভারতী ঘোষ সম্প্রতি ইস্তফা দিয়েছেন। জেলায় তৃণমূলের সংগঠনে দুর্বলতা ধরা পড়ায় দিদিও ইদানীং শুভেন্দুকে পশ্চিম মেদিনীপুরে নজর দিতে বলেছেন। ওমনি পালাবদল শুরু হয়ে গিয়েছে জেলায়। এই রূপান্তর অবধারিতই ছিল।
এ ব্যাপারে শুভেন্দুবাবুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি অবশ্য বলেন, “ওঁরা এর আগেও রাবণ দহনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। তখন যেতে পারেনি। তবে এ বার যাব।”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*