তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলে তপ্ত আরামবাগে ঘি ঢেলে এলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ফেতাই-এর দুর্যোগ ফুৎকারে উড়িয়ে, সভা করে ঘোষণা করে দিলেন, সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুল বেঁকিয়ে ঘি তুলে নেবে বিজেপি।
রবিবার রাতে আরামবাগে খুন হয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কর্মাধক্ষ্য তথা তৃণমূল নেতা মোক্তার শেখ। এরমধ্যেই এ দিন সেখানে পৌঁছে দিলীপ ঘোষ বলেন, “মানুষের টাকা মেরে তৃণমূলের যে নেতারা গাড়ি-বাড়ি-সম্পত্তি করেছে, তাদের সে সব ভোগ করতে দেব না। আজকে যদি বিজেপি করলে অপরাধ হয়, তাহলে একদিন তৃণমূল করলেও অপরাধ হবে।”
এ দিনের সভায় বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, “আরামবাগের একটা রাজনৈতিক চরিত্র আছে। এখানে যখন পালটায়, তখন সবটা পাল্টায়। কংগ্রেস থেকে সিপিএম হয়েছিল। সিপিএম থেকে তৃণমূল হয়েছে। এ বার তৃণমূল থেকে বিজেপি হতেও বেশি সময় লাগবে না।” কয়েক বছর আগেও আরামবাগ ছিল বামেদের মুক্তাঞ্চল। বিরোধী রাজনীতি করলেই বিচার বসত ‘জোনাল কমিটির’ অফিসে। কিন্তু এখন সে সবের পাট চুকেছে। এক সময় যে সিপিএম নেতাদের নামে বাঘে-গরুতে এক ঘাটে জল খেত, এখন সেই নেতারাই অর্ধেক সময় কাটান আরামবাগের বাইরে। গণতান্ত্রিক অধিকার ছিনিয়ে আনতে ভয় না পেয়ে লড়াই করার আবেদন জানান দিলীপ।
আরামবাগে শাসক দলের মদতে ঘরে ঘরে কুটির শিল্পের মতো মদের ভাঁটি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন দিলীপ। বলেন, “দিদিমণির ভাইরা দু’এক পেগ না পেলে ঠিক জোর পায় না। তাই মদের কারবার চালু হয়েছে ঘরে ঘরে। একদিকে মদ, অন্যদিকে বালি, পাথর, গরু পাচারের পয়সা যাচ্ছে তৃণমূলের পকেটে।” যুব তৃণমূল সভাপতি তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের নাম করেও অভিযোগ তোলেন দিলীপ।
প্রসঙ্গত, শান্তিপুর বিষমদ কাণ্ডে মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। সেই নিয়ে কৈলাসকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছিলেন অভিষেকের আইনজীবী। ব্যাপারটা গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। কিন্তু দিলীপ যে তাতে দমছেন না তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন এ দিন।
বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে রাজ্যের শাসক দল পুলিশকে ব্যবহার করছে বলে এ দিনো অভিযোগ করেন দিলীপ। বলেন, “তৃণমূল এখন ক্যাশ আর কেসের পার্টি। প্রথমে ক্যাশ দিয়ে কিনতে চাইছে। রাজি না হলে পুলিশকে লেলিয়ে কেস দিয়ে দিচ্ছে।” এ দিনও আরামবাগে যাওয়ার সময় সিঙ্গুর এবং তারকেশ্বরে দিলীপ ঘোষের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মীরা। মাস খানেক আগে হুগলির ডানকুনিতে হামলা হয়েছিল দিলীপের কনভয়ের উপর। সেই প্রসঙ্গ টেনে দিলীপ বলেন, “আমার উপর ন’বার আক্রমণের চেষ্টা হয়েছে। কিচ্ছু করতে পারেনি। সুনামির সময় আমি আন্দামানে ছিলাম। সেখান থেকে যখন বেঁচে ফিরেছি তখন তৃণমূল কিছুই নয়।” এ দিন রথযাত্রা বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে আরামবাগে আইন অমান্য করে বিজেপি।
Be the first to comment