মঙ্গলবার বিজেপির নবান্ন অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। এমজি রোডে পুলিশের গাড়িতে পেট্রল ঢেলে ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন। দাউ-দাউ করে জ্বলে ওঠে গাড়িটি। সেই ঘটনার পর থেকে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। অভিযোগ, উঠছিল মারমুখী বিজেপি কর্মীরা সেই কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছেন। যদিও, সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বঙ্গ বিজেপি শিবির। বুধবার সকালে বিজেপি সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ দাবি করেন, পেট্রল হাতে যাঁরা আগুন ধরিয়েছেন তাঁরা সকলে বাইরের লোক।
সাত-সকালে ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে বের হন বিজেপি নেতা। পরে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘রাস্তার পাশ দিয়ে হাজার-হাজার লোক হাতে পতাকা নিয়ে যাচ্ছেন। যাঁরা আগুন লাগাচ্ছেন তাঁরা তেল কোথা থেকে নিয়ে এলেন? পেট্রল কোথা থেকে পেলেন? আসলে তাঁরাতো বাইরের লোক। সেটা পুলিশের দেখার দায়িত্ব ছিল। আর যখন গাড়ি জ্বলছিল কোথায় ছিল পুলিশ ? যেখানে গাড়ি ছিল সেখানে পুলিশ ছিল না। যে লোকগুলো গাড়ি জ্বালাচ্ছিল পুলিশ তাঁদের ধরুক।কেন তাঁদেরকে না ধরে খবর করা হচ্ছে? এর পিছনে চক্রান্ত ছিল।
শুধু দিলীপ নয়, গতকালই এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানান, বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি দাবি করেন, ‘পুলিশের গাড়ি তৃণমূল জ্বালিয়েছে অথবা পুলিশ নিজেই জ্বালিয়েছে। বিজেপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছে।’
পাল্টা তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘সবাই দেখেছে কারা আগুন লাগিয়েছে।সবাই দেখেছে কারা অশান্তি করেছে। এখন ট্রেনি সভাপতি সুকান্ত আর টুইট মালব্য বলছেন তৃণমূল কর্মীরা করেছেন। এরা কি পাগল? আসলে এদের কোনও নীতি নেই, কোনও আদর্শ নেই, এদের সঙ্গে কোনও মানুষ নেই। আসলে পুলিশের সক্রিয়তায় বড় গন্ডগোল আজ এরা করতে পারেননি।’
বিকেল তিনটে নাগাদ উত্তপ্ত হয় এমজি রোড। সেখানে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বিজেপি কর্মীরা। তা হঠানোর চেষ্টা করতে থাকেন পুলিশ কর্মীরা। লাঠি উঁচিয়ে বিজেপি কর্মীদের দিকে তেড়ে যেতেও দেখা যায়। এমন একটা পরিস্থিতিতে বেলা সাড়ে তিনটের সময়ে এম জি রোডের ধারে দাঁড়িয়ে ছিল পুলিশের পিসিআর ভ্যান।সেই ভ্যানটিতে আগেই ভাঙচুর চালিয়েছিলেন বিজেপির উত্তেজিত কর্মীরা। এক কর্মী গাড়ির ছাদে উঠে লাফালাফি করতে থাকেন। দেখা যায়, কয়েকজন বিজেপি কর্মী গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে কাপড় পেঁচিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। গাড়ির মধ্যেই রাখা ছিল পুলিশের টুপি। কয়েকজন যুবক কলকাতা পুলিশের সেই টুপিতেই আগুন ধরিয়ে দেন। একই সময়ে পুলিশের গাড়িতে পেট্রল ঢালতে থাকেন কয়েকজন। মুহূর্তের মধ্যে দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে আগুন।
Be the first to comment