শুক্রবার সকাল ৯ টায় লাইভ ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আবেদন জানিয়েছিলেন, আগামী রবিবার ৫ এপ্রিল রাত ৯ টায় ৯ মিনিটের জন্য বাড়ির আলো নিভিয়ে মোমবাতি বা টর্চ কিংবা প্রদীপ জ্বালাতে।
শুক্রবার বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আপনার ইচ্ছা হলে আপনি শুনবেন (প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনে প্রদীপ জ্বালাবেন), আমার ইচ্ছা হলে আমি ঘুমোব”।
সাংবাদিক বৈঠকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন শোনামাত্র দৃশ্যত বিরক্তি প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমি এখন করোনা সামলাব নাকি আপনারা রাজনৈতিক যুদ্ধ লাগাবেন। প্লিজ এখন রাজনৈতিক যুদ্ধ লাগাবেন না। আপনাদের যদি মনে হয় প্রধানমন্ত্রী ভাল কথা বলেছেন, আপনারা শুনবেন। আমি কেন প্রধানমন্ত্রীর কথায় নাক গলাতে যাব”।
জাতির উদ্দেশে এদিন প্রধানমন্ত্রী বার্তা দেন, “একশ তিরিশ কোটি দেশবাসীর মহাশক্তি জাগ্রত করতে হবে। মহা সঙ্কল্পকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে। তাই ৫ এপ্রিল রবিবার রাত ৯ টায় আমি আপনাদের সকলের ৯ মিনিট চাইছি।”
জনতা কার্ফুর বিকেলে জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের ধন্যবাদ জানাতে দেশবাসীকে থালা,ঘন্টা, হাততালি বাজানোর আহ্বাণ জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই ঘোষণাকে আরএসএস-বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি বলে তীব্র সমালোচনা করেছিলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। যদিও মুখ্যমন্ত্রী এদিন সেই ধরনের কোনও রাজনৈতিক আক্রমণ করেননি।
তবে এদিন সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, “রাজ্যের কোথাও কোথাও কেউ কেউ রাজনৈতিক সুড়সুড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি শুনতে পাচ্ছি কেউ কেউ গিয়ে বলছে কেন্দ্র সব করে দিচ্ছে। কেন্দ্র কি একটা মাস্কও দিয়েছে? রেশন দোকানে গিয়ে বলছে কেন্দ্রের চাল দেওয়া। কেন্দ্র আবার কবে চাল দিল?” আমি শুনলাম কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, রেশন দোকানে তৃণমূলের সিম্বল লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এরকম ঘটনা কোথাও ঘটেনি। তৃণমূলের সিম্বল কোথাও লাগানো থাকলে সেটা দলগত ভাবে আলাদা করে করা হচ্ছে। সেটা আমরা আলাদা করে করি। তাঁর দ্বৈত সত্ত্বার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “এক আমি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এবং দুই মা মাটি মানুষের দল পরিচালনা করি বলেই আমি মুখ্যমন্ত্রী।”
মুখ্যমন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠক শেষ হতেই রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “দুর্যোগের সময়েও মুখ্যমন্ত্রী রাজনীতি করছেন এবং ডাহা মিথ্যে কথা বলছেন, “এটাই হতাশার। রেশনে যে ২ টাকা কেজি চাল পাওয়া যায় তার প্রকৃত দাম কেজি প্রতি ৩৭ টাকা। কেন্দ্র সরকার তার মধ্যে ৩৪ টাকা ভর্তুকি দেয়। এটা গোটা দুনিয়া জানে। এই রাজ্যের মেডিকেল কলেজগুলিতে টেস্ট কিট পাঠানো, বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল খাতে ১০৯৮ কোটি পাঠানো—গত কদিনে এসব তো কেন্দ্রই করেছে। তবুও মিথ্যা বললে মহাপাপ হবে”।
Be the first to comment