রোজদিন ডেস্ক :- থ্রেট কালচারের অভিযোগ এনেছিলেন আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো, দেবাশিস হালদাররা। এবার তাঁদের বিরুদ্ধে ‘টেরর কালচার’ চালানোর বড় অভিযোগ আনলেন আরজি করের একাংশ জুনিয়র চিকিৎসক।
‘বিচার পেতে’ ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের বিরুদ্ধে পাল্টা সংগঠন গড়লেন জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ। শনিবার দুপুরে কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক থেকে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের তরফে শ্রীশ চক্রবর্তীর অভিযোগ, নির্যাতিতার বিচারের নামে ৪ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা তুলেছেন অনিকেতরা।
একই সঙ্গে বিচারের নামে রাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অরাজকতা তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ এনে মুুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার আর্জিও জানালেন তাঁরা।
এদিন সাংবাদিক বৈঠক থেকে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের বিরুদ্ধে আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসক শ্রীশের দাবি, “আমরাই প্রথম নির্যাতিতা দিদির বিচার চেয়ে আন্দোলন শুরু করেছিলাম। তবে আমরা বলেছিলাম, কর্মবিরতি মানব না। রোগী পরিষেবা অক্ষুন্ন রেখে আমরা আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। তখনই আমাদের বিরুদ্ধে থ্রেট কালচারের অভিযোগ আনা হয়।”
শ্রীশের আরও অভিযোগ, “জোর করে মিথ্যেকে সত্যি করা হল। চাপ দিয়ে নিজেদের মতো এনকোয়ারি কমিটি তৈরি করে আমাদের ৫৩ জনকে সাসপেন্ড করা হল। আমাদের ওপর দিয়ে কী গেছে বলে বোঝাতে পারব না। আমাদের কেরিয়ার শেষ করে দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিল।”
বস্তুত, ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের আন্দোলনের জেরে সম্প্রতি আরজি করে বসেছিল তদন্ত কমিটি। তাঁরা ৫৩ জনকে সাসপেন্ড করে। শ্রীশ চক্রবর্তী, সৌরভ দাসরা তাঁদেরই অন্যতম।
কলেজের সাসপেনশনের বিরুদ্ধে আদালতে যান তাঁরা। হাইকোর্টের তরফে ওই সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ জারি করা হয়। শ্রীশ বলেন, “তারপরও অনিকেত মাহাতোরা আমাদের কলেজে ঢুকতে বাধা দেয়। উল্টে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে আমাদের নামে বলা হয়, নটোরিয়াস ক্রিমিনাল! আর যারা নির্যাতিতা দিদির বিচারের নামে ৪কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা তুলেছে। ওরা কি নটোরিয়াস ক্রিমিনাল নয়?”
খানিক থেমে জবাবও দিয়েছেন নিজেই। তাঁর কথায়, “অনিকেত মাহাতোরা তো আমাদের ওপর টেরর কালচার শুরু করেছে। আপনারা কী জানেন, নির্যাতিতার ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সই করার জন্য রিয়া বেরা নামে এক চিকিৎসকের অ্যাকাউন্টে ২৮ লক্ষ টাকা ঢুকেছে। আমরা চাই সঠিক তদন্ত হোক।”
কে এই রিয়া বেরা? আরজি করের অপর জুনিয়র চিকিৎসক সৌরভ দাসের অভিযোগ, “রিয়া বেরার বিরুদ্ধেও সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের অভিযোগ রয়েছে। অথচ সেও কি না ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের সদস্য।”
তাঁর অভিযোগ, “মূল ইস্যু থেকে সরে অনিকেত, দেবাশিসরা আন্দোলনকে বেলাইন করছে। প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে আমরাই থ্রেট কালচারের শিকার হয়ে গেলাম। সে কারণেই বাধ্য হয়ে আমরা নতুন সংগঠন তৈরি করে মানুষের কাছে সবটা জানাতে সামনে এলাম।”
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসক সৌরভ বলেন, “ম্যাডাম, আপনি এক তরফের কথা শুনেছেন। আমাদের কথাও শুনুন। তাহলে বুঝতে পারবেন ডাক্তারি আন্দোলনের নামে কীভাবে অতি বাম রাজনীতি ঢুকে পড়েছে এর মধ্যে।”
অন্যদিকে, আরজি করের নির্যাতিতার বিচার চেয়ে এদিনই গণকনভেনশনের ডাক দিয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট। ওই কনভেনশনে যাঁরা উপস্থিত থাকবেন, তাঁদের মধ্যে কতজন ডাক্তার, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সৌরভ, শ্রীশরা।
জবাবে অনিকেত, দেবাশিসরা কী বলেন, প্রশাসনের তরফ থেকেও কোনও বার্তা আসে কিনা, এখন সেটাই দেখার।
Be the first to comment