আমেরিকার মধ্যবর্তী নির্বাচনে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাটরা। এবার তারা ইচ্ছা করলে ট্রাম্প প্রশাসনের নানা কাজকর্ম নিয়ে তদন্ত করতে পারে। নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর ট্রাম্পকে রিপোর্টাররা এই নিয়ে প্রশ্ন করতেই তিনি রেগে আগুন। সোজা বলে দিলেন, আমার ব্যাপারে কেউ তদন্ত করতে এলে দেখে নেব। ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করব।
ভোটের পরে ট্রাম্প সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে বারে বারে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন রিপোর্টারদের সঙ্গে। ক্রমাগত দাবি করতে থাকেন, তাঁর দৌলতেই রিপাবলিকানরা সেনেটে গরিষ্ঠতা পেয়েছে। কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে তাঁর বিরোধীরা জিতেছে বটে কিন্তু তার তেমন গুরুত্ব নেই। বরং সেনেটে যে রিপাবলিকানদের জয় হয়েছে, তার গুরুত্ব অনেক বেশি।
আমেরিকার সংবিধান অনুযায়ী, ডেমোক্র্যাটরা যেহেতু হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে গরিষ্ঠতা পেয়েছেন, তাঁরা এমন কয়েকটি কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন যারা ইচ্ছা করলে ট্রাম্পের কার্যকলাপ নিয়ে তদন্ত করতে পারে।
ট্রাম্পকে নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। যেমন, তিনি কী পরিমাণে কর দেন এখনও অনেকেই জানে না। বার বার বলা সত্ত্বেও ধনী ব্যবসায়ী ট্রাম্প প্রকাশ্যে তাঁর আয়কর রিটার্নের কথা জানাননি।
অভিযোগ, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার সাহায্যে জিতেছিলেন ট্রাম্প। আমেরিকার বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট মুয়েলার বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে তদন্ত করছেন। ডেমোক্র্যাটরা চাইবে তদন্ত চলুক আরও দ্রুতগতিতে। এমনকী তারা নতুন কোনও সংস্থাকে দিয়েও তদন্ত করাতে পারে।
ট্রাম্প রিপোর্টারদের বলেছেন, তিনি প্রশাসনের নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে চান। কিন্তু তারা যদি তদন্ত করে তাহলে পরিস্থিতি যাবে বদলে। একসঙ্গে কাজ করা সম্ভব হবে না।
তাঁর কথায়, ওরা যে খেলাটা খেলবে, তা আমরাও খেলতে পারি। এমনকী ওদের চেয়ে ভালোই পারি।
পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা করছেন, ট্রাম্প যদি হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভকে অস্বীকার করে সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করেন, তা হলে প্রশাসনিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। অথচ আমেরিকায় এখন এমন অনেকগুলি সমস্যা রয়েছে যাদের সমাধানে দুই দলেরই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা উচিত। যেমন, দেশের পরিকাঠামোয় অবিলম্বে উন্নতি দরকার। দেশে নানা ধরনের ওষুধের দাম বেড়ে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যেতে বসেছে। রাজনীতিকদের দলমতনির্বিশেষে একসঙ্গে বসে স্থির করা উচিত, কীভাবে ওষুধের দাম কমানো যায়। তৃতীয়ত চিনের সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। সেই ব্যাপারটাও মিটিয়ে নেওয়া উচিত দ্রুত।
ডেমোক্র্যাটরা অবশ্য ইতিমধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাঁরা ট্রাম্পের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে আগ্রহী। আগামী দিনে যিনি হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের স্পিকার হবেন বলে মনে করা হচ্ছে সেই ন্যান্সি পেলোসি ইতিমধ্যে ট্রাম্পকে ফোন করে বলেছেন, একসঙ্গে কাজ করতে পারলে খুশি হবেন। সাংবাদিক বৈঠকে ট্রাম্প নিজে জানিয়েছেন সেকথা।
Be the first to comment