২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগেই দুয়ারে রেশন প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিল তৃণমূল সরকার। ভোটের পর সেই প্রকল্প চালুও হেছে রাজ্যে। এবার সেই প্রকল্প নিয়েই কলকাতা হাইকোর্টে বড় ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। এই প্রকল্প ‘জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন, ২০১৩’-র পরিপন্থী বলে দাবি করল হাইকোর্ট। রেশন ডিলারদের করা একটি মামলায় এমনটাই বলেছে আদালত।
প্রকল্পের বিরোধিতা করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন রেশন ডিলার। কেন বাড়িতে গিয়ে রেশন দিতে হবে, সেটাই প্রশ্ন ছিল ডিলারদের। এর আগে সিঙ্গেল বেঞ্চের দ্বারস্থ হলে তাঁদের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। এরপরই ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন ডিলাররা। সেই মামলাতেই এবার এই নির্দেশ দিল আদালত।
প্রথমে বিচারপতি কৃষ্ণা রাওয়ের এজলাসে আবেদন করেছিলেন রেশন ডিলারদের একাংশ। ২০২১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রাজ্য সরকার দুয়ারে রেশন প্রকল্প নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সেই বিজ্ঞপ্তিকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করার আবেদন জানানো হয়েছিল। মামলাকারীর তরফে দাবি করা হয়েছিল, কেবলমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারেরই প্রয়োজনীয় পণ্য উৎপাদন, সরবরাহ এবং বিতরণ করার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ থাকতে পারে, নিষিদ্ধ করার ক্ষমতাও রয়েছে কেন্দ্রেরই। মামলায় যুক্তি ছিল, কেন্দ্রীয় সরকার বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে রাজ্যের হাতে ক্ষমতা অর্পণ করে। তবে এ ক্ষেত্রে, কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গকে কোনও ক্ষমতা অর্পণ করেনি। তা সত্ত্বেও রাজ্য প্রকল্প চালু করেছে।
কিন্তু সিঙ্গল বেঞ্চ জানিয়েছিল, দুয়ারে রেশন প্রকল্প বেআইনি নয়। ফলে স্বস্তি পায় রাজ্য। এরপর মামলাকারীরা ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। তাতেই এবার ফের অস্বস্তি বাড়ল রাজ্যের।
এই রায় প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘এটা সবার জানা উচিত, দিল্লির সরকার আগেই দুয়ারে রেশন চালু করেছে। পশ্চিমবঙ্গই প্রথম নয়। রাজ্যের মানুষের সুবিধার জন্যই রাজ্য সরকার এই প্রকল্প চালু করেছিল। আমি আদালতের রায়ের সঙ্গে একমত নই।’
বিজেপি নেতা রাহুল সিনহার দাবি, বহু মানুষ দুয়ারে রেশন পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আর আদালতের এই রায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুজোর আগে বড় ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। অন্যদিকে, রেশন ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতা বিশ্বম্ভর বসু জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষই এই প্রকল্প চায় না। তিনি ব্যাখ্যা করেন, রেশন ডিলারের কাছে এলে গ্রাহকদের অনেক সুবিধা হত। এ ছাড়া তাঁর দাবি, অনেক সময় বাড়ি ফাঁকা থাকাকালীন রেশন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, ফলে অসুবিধায় পড়ছেন অনেকেই।
Be the first to comment