দীর্ঘ ১৯ বছর পর মোহনাবাগানের সামনে সুযোগ এসেছিলো আরও একবার ডুরান্ড কাপ ঘরে আনার। ইস্টবেঙ্গলকে টপকে টুর্নামেন্টের সবথেকে বেশিবার (১৭) শিরোপা জেতার। কিন্তু গোকুলাম কেরালা এফসি-র কাছে ২-১ গোলে হেরেই ফাইনালে স্বপ্নভঙ্গ হলো শতাব্দী প্রাচীন ক্লাবের। শনিবার ঘরের মাঠ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনেই সব আশা শেষ হয়ে গেলো কিবু ভিকুনার ছেলেদের। শেষ হাসি হাসলেন অপর স্প্যানিশ কোচ স্যান্টিয়াগো ভারেলা। এদিন প্রথমার্ধের প্রথম ১৫ মিনিটের মধ্যে অন্তত দু’টো গোল করে ফেলতেই পারত গোকুলাম। তিন বার গোলের মুখ খুলে ফেলেছিল তারা। কিন্তু শুধুমাত্র ফিনিশ করতে না পারায় গোলের খাতা খুলতে পারছিলনা তাঁরা। বাগানের রক্ষণ ভাগের দৈন্য দশা ফের একবার প্রকট হয়ে গেল। গোটা প্রথমার্ধ জুড়েই ম্যাচে আধিপত্য নিয়ে খেলল কেরালার দলটি।
ফাইনালের জন্য বাগানের স্প্যানিশ কোচ কিবু ভিকুনা ভরসা রেখেছিলেন আই লিগ জয়ী গোলরক্ষক দেবজিত মজুমদারের ওপরেই। চলতি মরসুমে বাগানের জার্সিতে এটি তাঁর দ্বিতীয় ও ডুরান্ডের প্রথম ম্যাচ। তবে বিদেশি কোচের মান রেখেছেন দেবজিত। তাঁর কয়েকটি অসাধারণ সেভ মোহনবাগানকে আরও কয়েকটি গোল খাওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়ে দেয়।
এদিন চামোরো-সুহেরকে ওপরে কিবুনা নাওরেম-বেইতিয়া-সুরাবুদ্দিনকে ওঠানামা করাচ্ছিলেন কোচ। স্ক্রিন খেলছিলেন সাহিল। ম্যাচের ৪৪ মিনিটেই ঘটে যায় অঘটন। ডি-বক্সের মধ্যে ওয়ান-টু-ওয়ান ট্যাকেল করার সময় কিসেক্কাকে ফাউল করে বসেন দেবজিত। রেফারি সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন। মার্কাস জোসেফ দুরন্ত শটে গোকুলামকে এগিয়ে দেন। দ্বিতীয়ার্ধের ৬ মিনিটের মধ্যে ফের সেই ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর ফুটবলার দুরন্ত গোলে স্কোরলাইন ২-০ করে দেন। চলতি মরসুমের ১১ নম্বর গোলটা করে ফেললেন তিনি।
কিন্তু গোকুলামের গোলরক্ষক উবেইদ বাগানকে গোল উপহার দিয়ে বসলেন ম্যাচের ৬৪ মিনিটে। বেইতার ফ্রি-কিক থেকে চামোরো হেড করেন। উবেইদ বলটা গ্রিপ করতে গিয়ে ফসকে গোলের মধ্যেই বল ঢুকিয়ে দেন। তখনও সমর্থকরা আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেন যে, বাগান ফিরে আসবে লড়াইয়ে। বাগান ফুটবলাররাও মরিয়া লড়াই চালাতে থাকে গোল শোধ করে খেলাটাকে অন্তত অতিরিক্ত সময় নিয়ে যাওয়ার। ম্যাচের ৮৭ মিনিটে ১০ জনে হয়ে যায় কেরালা। দলের ডিফেন্ডার জেস্টিন জর্জ জোড়া হলুদ কার্ড দেখায় মাঠ ছাড়েন। কিন্তু মোহনবাগান সেই সুযোগটাও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়। হতাশ হয়েই ফিরতে হলো গঙ্গাপাড়ের ক্লাবটিকে।
মোহনবাগান: মোরান্তে (গঞ্জালেজ), গুরজিন্দর, আশুতোষ, সালভাদর, বেইতিয়া, নাওরেম, কিমকিমা, সুহের, সুরাবুদ্দিন (জেসুরাজ), দেবজিৎ ও সাহিল
গোকুলাম এফসি: উবেইদ, নাওচা, ডেনিস, ইরশাদ, মার্কাস, রাশিদ, মেইতেই, সেবাস্তিয়ান, শিবিল, জেস্টিন ও হেনরি (ব্রুনো পেলিসারি)।
Be the first to comment