রাজ্যে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে নয়া মোড়। এবার তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হল কুড়ি কোটি টাকা। পাশাপাশি উদ্ধার হয়েছে কুড়িটি মোবাইল ফোন-সহ একাধিক নথিপত্র। ইডি সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে ৷ টালিগঞ্জের অভিজাত আবাসনে তল্লাশি চালিয়ে এত সম্পত্তির হদিশ পান এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা। অর্পিতার কাছে কোন সূত্র ধরে এত টাকা এল, সে বিষয়ে খোঁজখবর নিতে তদন্তে নেমেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা।
জানা গিয়েছে, অর্পিতা নাকতলা উদয়ন সংঘের মডেল। সেই টাকা কার, কোথা থেকে তাঁর কাছে এল – সেসব জানতে মরিয়া ইডি। এই টাকার সঙ্গে এসএসসি দুর্নীতির যোগ আছে বলেই প্রাথমিক ধারণা দুঁদে তদন্তকারীদের। ইডি সূত্রে খবর, অর্পিতার বাড়ি থেকে বিদেশি মুদ্রা, সোনাও পাওয়া গিয়েছে। ইতিমধ্যে টাকা গোনার জন্য তিনটি মুদ্রা গণনার মেশিনও আনা হয়েছে।
এদিকে কোথা থেকে এল এত টাকা? সূত্রের খবর, ইডি আধিকারিকদের এ প্রশ্নে কোনও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে টাকা গোনার কাজ। অন্যদিকে এদিনের তদন্তে ২০ কোটি টাকার পাশাপাশি ২০টি মোবাইল উদ্ধার হয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে। এদিকে আবাসনে অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায় থাকতেন সেখানে ইতিমধ্যেই জোরদার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে ইডি। গোটা আবাসন ঘিরে রেখেছে আধা সেনা।
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের তদন্তে শুক্রবার সকাল থেকেই রাজ্যের ১৪টি জায়গায় পৃথক পৃথকভাবে অভিযান চালাযন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটর (ইডি) গোয়েন্দারা। এরমধ্যে ছিল এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা এসপি সিনহার সার্ভে পার্কের বাড়ি-সহ রাজ্যের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় নাকতলার বাড়ি এবং মেখলিগঞ্জে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর বাড়ি।
ইডি সূত্রে খবর, এসএসসি দুর্নীতিকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। অন্যদিকে, ১২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলার বাড়িতেই রয়েছেন ইডি’র তদন্তকারীরা ৷ জানা গিয়েছে, রাত বাড়তেই নাকতলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আরও এক নতুন আধিকারিক। রাত তখন প্রায় সাড়ে দশটা। একটি সাদা গাড়ি ঢোকে নাকতলায়। গাড়িটি সোজা গিয়ে থামে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে। ইডির নতুন আধিকারিক সঙ্গে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানও অর্থাৎ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও আঁটসাঁট করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, উদ্ধার হওয়া ওই ২০ কোটি টাকা নিয়ে ইডির প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে টুইট করেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ট্য়াগ করে টুইটে তিনি লিখেছেন, এটাই বাংলা মডেল ৷ তৃণমূল দুর্নীতির সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে ৷
টুইটারে খোঁচা দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। তিনিও প্রশ্ন তুলেছেন, “এটি কি হিমশৈলের চূড়া?”
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুনাল ঘোষের দাবি, ইডি যে টাকা ইডি যে টাকা উদ্ধার করেছে, তার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। এই তদন্তে যাদের নাম আসছে, এসংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দেওয়ার দায়িত্ব তাঁদের বা তাঁদের আইনজীবীদের।
Be the first to comment