এগরায় বেআইনি বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬। অভিযোগ বাড়ির ভিতরেই বাজি কারখানার আড়ালে বেআইনি ভাবে বোমা তৈরির কাজ চলছিল৷ আজ সকাল ১১ টা নাগাদ আচমকাই বিস্ফোরণের তীব্র শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। ঘটনায় গোটা বাড়িটি উড়ে যায়। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্তভার সিআইডি-কে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে ৷
স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণপদ ওরফে ভানু বাগের বাড়িতে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে খবর ৷ নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে এগরায় মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সকালে এগরার খাদিকূল গ্রামে বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, স্থানীয়রা ছুটে এসে দেখেন, রাস্তার ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে দগ্ধ দেহ। গাড়িতে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় আহতদের। কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গোটা এলাকা। যে বাড়িতে বোমা বাঁধার কাজ চলছিল বলে অভিযোগ, বিস্ফোরণের পর দেখা গেল পড়ে রয়েছে শুধু বাড়ির কাঠামোটুকু। ৭ জন আহত বলে জানা যাচ্ছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভাতে শুরু করে দমকল। উত্তেজিত জনতাকে আটকাতে গেলে উল্টে পুলিশকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। ঘটনার নেপথ্যে কৃষ্ণপদ ওরফে ভানু বাগের হাত রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। যদিও এখনও তাঁর কোনও খোঁজ মেলেনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওড়িশা সীমানা লাগোয়া ওই এলাকার বেশ কিছু বাড়িতে অনেক দিন ধরেই বেআইনি বাজি কারখানা চলছিল। এর আগেই ওই কারখানায় ৬ বার বিস্ফোরণ হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। মূল অভিযুক্তকে আগে গ্রেফতার করা হলেও পরে তিনি জামিনে ছাড়া পেয়ে যান। এই বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে দাবি করেছেন, ওই বাড়িটিতে আগেও বেআইনি বাজি তৈরির অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ ৷ বাড়ির মালিককেও গ্রেফতার করা হয়৷ তিনি জানান বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে ফরেন্সিক দল ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করবে৷
অন্যদিকে এগরার বিস্ফোরণে এনআইএ তদন্তের দাবি তুলেছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে জানান, শুধু NIA কেন সিবিআই তদন্ত হলেও তাঁর কোনও আপত্তি নেই। তবে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করার কথা বলেন তিনি। পাশাপাশি বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে রাজনীতি না করার আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানান, শুভেন্দু অধিকারী শকুনের রাজনীতি করেন। তাঁর কথায় বিজেপি কোথাও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করাতে চাইছে মানেই ধরে নিতে হবে যে গেরুয়া শিবিরের তরফ থেকে আড়াল করার মতো কিছু রয়েছে। তিনি বলছেন বিরোধী দলনেতা তো ওই জেলারই মানুষ। তাহলে এতদিন তিনি কোথায় কোন খারাপ কাজ হচ্ছে তা নিয়ে কথা না বলে, হঠাৎ একটা দুর্ঘটনা ঘটা মাত্রই শকুনের রাজনীতি করতে সরব কেন? তিনি বলেন এটা প্রশাসন দেখছে, এর সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও সম্পর্ক নেই।
Be the first to comment