হাইভোল্টেজ নন্দীগ্রামে শিরোনামে উঠে এসেছিল বয়াল বুথ। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতেই মুখোমুখি হয়েছিল তৃণমূল ও বিজেপি। পরিস্থিতি এতটাই চরম হয়ে উঠেছিল রাজ্যপালকে ফোন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বয়ালে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়েছে, এই অভিযোগে নির্বাচন কমিশনে হাতে লেখা চিঠি জমা দিয়েছিলেন তিনি। এ বার সেই চিঠির জবাব দিল কমিশন।
চিঠিতে কমিশন জানিয়েছে, বয়ালের বুথে কোনও ভোটারকে ভয় দেখানো হয়নি। মমতার চিঠিতে তথ্যগত ভুল রয়েছে বলেও দাবি করেছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনে মমতার যে চিঠি জমা পড়েছিল, তাতে তিনি অভিযোগ করেছিলেন বয়ালের ৭ নং বুথে তৃণমূলের এজেন্টকে বসতে দেওয়া হয়নি। সেই বুথের দখল নিয়েছিল বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। মমতা এ-ও অভিযোগ করেছিলেন, বুথের ২০০ মিটারের মধ্যে সেখানে নিয়ম ভেঙে বহিরাগতরা উপস্থিত ছিলেন।
যার ফলে স্বাভাবিক ভোট প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন মমতা। কিন্তু সেই চিঠির পাল্টা দিয়ে কমিশনের সেক্রেটারি জেনারেল উমেশ সিনহা একাধিক রিপোর্টের উল্লেখ করে তাঁর সব দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন।
উমেশ সিনহার এই চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে প্রিসাইডিং অফিসার, নন্দীগ্রামের পুলিশ পর্যবেক্ষক নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠীর পর্যবেক্ষণ-সহ একাধিক রিপোর্ট। সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ার ধারাবাহিক বর্ণনা দিয়েছে কমিশন। কমিশনের চিঠিতে জানানো হয়েছে, ৭ টা ১০ মিনিটে সেখানে তৃণমূলের কোনও পোলিং এজেন্ট ছিলেন না।
এরপর ৭ টা ৪০ মিনিটে অভিযোগ পেয়ে কমিশন নিরাপত্তার সবরকম ব্যবস্থা করে তৃমমূলের পোলিং এজেন্টকে বুথে নিয়ে আসতে চায়। কিন্তু কমিশনের দাবি, তৃণমূলের পোলিং এজেন্টই বুথে আসতে চাননি।
কমিশন এই চিঠিতে জানিয়েছে, যেহেতু কোনও ব্যক্তিকে জোর করে পোলিং এজেন্ট হিসেবে বুথে আসার কথা বলা যায় না। তাই তৃণমূলের পোলিং এজেন্টকে বুথে আনা যায়নি। এরপর ৯টা ৩৩ মিনিটে সেখানে যান নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী। তাঁর রিপোর্ট অনুযায়ী, কমিশন দাবি করেছে বয়ালের ৭ নম্বর বুথে স্বাভাবিক ভোটপ্রক্রিয়া হয়েছে। সেই সময় বুথের আশপাশে কোনও সমস্যা দেখেননি বলেই জানিয়েছেন নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী। সেখানে মোতায়েন থাকা ৮ জন জওয়ান ও কুইক রেসপন্স টিমের পক্ষ থেকেও কোনও অস্বাভাবিক ভোটগ্রহণের অভিযোগ আসেনি বলেই জানিয়েছে কমিশন। তাই মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে তথ্যগত ভাবে ভুল বলেই দাবি করেছে কমিশন।
এ বিষয়ে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “নির্বাচন কমিশনের সব চিঠি গুরুত্ব দিয়ে দেখার কোনও দরকার নেই। আমরাই তো বারবার অভিযোগ করেছি নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতমূলক কাজ করছে। নির্বাচন কমিশন কোনও সুপার জজ নয় স্রেফ কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত আইএএস ও আইপিএসদের নিয়ে গঠিত একটা জায়গা। তবে আমি এটা জানি না এটা চূড়ান্ত কোনও চিঠি কি না। নির্বাচন কমিশন তার জবাব দিয়েছে। আমরা যদি বিচার না পাই অন্য কোনও পথে হাঁটব।”
Be the first to comment