কারাট যুগের অবসান সিপিএমে! কেন্দ্রীয় কমিটিতে বাংলার পাঁচ জন

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:- সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটিতে তরুণদের অন্তর্ভুক্তির উপর জোর দেওয়ার কথা শোনা গিয়েছিল। সেই সম্ভাবনা বাস্তবায়িত হল রবিবার তামিলনাড়ুর মাদুরাইয়ে ২৪তম পার্টি কংগ্রেসের শেষ দিনে। এলেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের মতো তরুণ নেত্রী। অন্যদিকে, তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এবার দলের পলিটব্যুর থেকে বাদ গেলেন প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাত। জায়গা হয়নি স্ত্রী বৃন্দারও। তাছাড়া ৮৫ জনের কেন্দ্রীয় কমিটি তৈরি হলেও নাম ঘোষণা হয়েছে ৮৪ জনের ৷

কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পেলেন বাংলার পাঁচ জন ৷ তালিকায় রয়েছেন, ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদক কনীনিকা ঘোষ। এছাড়াও সমন পাঠক, দেবব্রত ঘোষ ও সৈয়দ হোসেনও এসেছেন কমিটিতে। পাশাপাশি বাংলা থেকে পলিটব্যুরোর নতুন সদস্য হলেন শ্রীদীপ ভট্টাচার্য।
সমন, দেবব্রত ও সৈয়দ যথাক্রমে দার্জিলিং, হুগলি ও পূর্ব বর্ধমানের জেলা সম্পাদক। সিপিএমের নিয়মে, এক সঙ্গে তিন স্তরের কমিটিতে থাকা যায় না। ফলে, এই তিন জনের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদন নিতে হবে। এর আগে সকালের দিকে জানা যায় দলের নতুন সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন কেরলের প্রবীণ সিপিএম নেতা এমএ বেবি।
কেন্দ্রীয় কমিটির পাশাপাশি এদিন ১৮ সদস্যের পলিটব্যুরোও গঠন করা হয়েছে। নবগঠিত পলিটব্যুরোতে এসেছেন পশ্চিমবঙ্গের বামনেতা শ্রীদীপ ভট্টাচার্য। এছাড়া পলিটব্যুরোও থাকছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, বিভি রাঘাভুলু, এমএ বেবি, তপন সেন, নীলোৎপল বসু, মহম্মদ সেলিম, এ বিজয়রাঘবন, অশোক ঢাওয়ালে, রামচন্দ্র ডোম, এমভি গোবিন্দন, আমরা রাম, ভিজু কৃষ্ণন, মারিয়াম ঢাওয়ালে, ইউ বাসুকি, কে বালাকৃষ্ণন, জিতেন্দ্র চৌধুরী ও অরুণ কুমার।
উল্লেখ্য, সিপিএমের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক সংস্থা হল পলিটব্যুরো। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির থেকে অনুমোদনের পর কোনও সিদ্ধান্ত এই পলিটব্যুরোতে আসে। এখান থেকে পাশ হলে তবে তা কার্যকর হয়। ঠিক এই কারণে পলিটব্যুরোতে কারাতের না থাকা অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ। ভোট-রাজনীতির নিরিখে সিপিএমের অবস্থান এই মুহূর্তে মোটেই ভালো নয়। কেরল ছাড়া অন্য কোথায় সরকারে নেই দেশের সববৃহৎ বাম দলটি। এমন আবহে দলের রণকৌশল কী হবে তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে।
সিপিএমের একটা বড় অংশ ইভিএমে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকতে জোট রাজনীতির উপর জোর দিয়েছে। সেই মতো রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে থাকা কংগ্রেসের হাত ধরে বাংলায় ভোটে লড়েছে সিপিএম। তবে তাতে কাজের কাজ হয়নি। এরপরও দলের অনেকেই অন্য দলগুলির সঙ্গে সমন্বয়ের কথা বলছে। তারা চায় ইন্ডিয়া শিবিরে সিপিএমের প্রভাব আরও বাড়ুক। দায়িত্বে থাকার সময় ঠিক এই কাজটাই করেছেন সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। কেউ কেউ আবার বৃহত্তর বামঐক্যের কথা বলছেন। কিন্তু কারাট-লবি কংগ্রেস বা ওই ধরনের দলের সঙ্গে সমন্বয় সাধন থকে বরাবর দূরে রাখার পরামর্শ দিয়ে আসছে। কিন্ত এখন কারাটহীন পলিটব্যুরো কোন সিদ্ধান্ত নেবে তা আবশ্যিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*