শিশুশিল্পী থেকে নায়ক

Spread the love

তপন মল্লিক চৌধুরী

সিনেমায় প্রথমে শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করে পরবর্তীতে নায়ক বা নায়িকার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন অনেকেই। কেউ বলেন,‌ শিশু চরিত্রের ইমেজ যদি দর্শক মনে খুব বেশি প্রভাব বিস্তার করে ফেলে তাহলে নায়ক বা নায়িকার ইমেজ তৈরি হতে সময় লাগে। কথাটা পুরোপুরি সত্যি নয়, কারণ একসময় শিশু চরিত্রে অভিনয় করে দারুন জনপ্রিয় হওয়ার পরও নিজেকে নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এমন সংখ্যা একাধিক। তবে এমন উদাহরণও অনেক আছে যে শিশু শিল্পী হিসাবে সাড়া জাগানোর পর প্রাপ্ত বয়সে চরিত্রাভিনেতা হিসাবে দর্শকদের মনে একটুও জায়গা করে নিতে পারে নি। বলিউডে পরবর্তীতে সফল নায়ক বা নায়িকা হয়েছেন অথচ যারা একদিন শুরু করেছিলেন শিশু শিল্পী হিসেবে তাদের কয়েক জনের কথা কথা বলা হল।

সঞ্জয় দত্ত

বড় পর্দায় সঞ্জয়ের অভিষেক হয়েছিল ছোটবেলায়। ১৯৭২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘রেশমা অউর সেরা’ ছবিতে একটি কাওয়ালি গানের দৃশ্যে অভিনয় করেছিলেন সঞ্জয় দত্ত। এর অনেক পরে তিনি নায়কের ভূমিকায় রূপালি পর্দায় হাজির হয়েছিলেন। সঞ্জয় দত্তের মা-বাবা দুজনই তারকা ছিলেন। প্রয়াত অভিনেতা সুনীল দত্ত আর মা প্রয়াত অভিনেত্রী নার্গিস বলিউডে খুবই প্রতিষ্ঠিত নাম। জীবনের নানা ঝড় ঝাপটার পরও সঞ্জয় বলিউডে এখনও সক্রিয়।

আমির খান

জনপ্রিয় তারকা আমির খানের বাবা তাহির হুসেইন খান ছিলেন বলিউডের একজন পরিচালক ও প্রযোজক। আমিরের প্রথম ছবি কিন্তু ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’ নয়। এই অভিনেতা শিশুশিল্পী হিসেবে প্রথম কাজ করেন ১৯৭৩ সালে ‘ইয়াদো কি বরাত’ ছবিতে। শিশু শিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করে আমির খান শুধু নায়ক হিসেবে সফল তাতো নয় প্রযোজক আমির খানের সাফল্য বলিউডের সীমা অতিক্রম করেছে বেশ কয়েক বছর আগেই।

ববি দেওল

নায়ক ধর্মেন্দ্রর ছেলে হওয়ার সুবাদে কয়েকটি ছবি করার সুযোগ পেয়েছিলেন ববি দেওল। কিন্তু অভিনয়ে অপটু হওয়ায় বলিউডে একেবারেই সুবিধা করতে পারেননি। ববি কিন্তু নায়ক হওয়ার অনেক আগেই ১৯৭৭ সালে শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করেছিলেন ‘ধরমবীর’ ছবিতে। সেটি ছিল তাঁরা বাবার ছবি।

আদিত্য নারায়ণ

সংগীতশিল্পী উদিত নারায়ণের ছেলে আদিত্য নারায়ণ গান আর অভিনয় দুই দিকেই আছেন। কিন্তু বলিউডের দর্শকেরা এই আদিত্যর সঙ্গে বেশ আগে থেকেই পরিচিত। ছোট্ট আদিত্য প্রথম কাজ করেছিলেন ‘যব প্যায়ার কিসি সে হোতা হ্যায়’ (১৯৯৮) ছবিতে। সেখানে তিনি ছিলেন সালমান খানের ছেলে। এরপর শাহরুখ খানের ‘পরদেশ’ ছবিতেও কাজ করেছিলেন কিশোর শিল্পী হিসেবে।

অজয় দেবগন

বলিউডের ‘ডার্ক হাউস’ বলা হয় অজয় দেবগনকে। বলিউডে নায়ক হিসেবে তাঁর অভিষেক ‘ফুল অউর কাঁটে’ ছবিতে। তবে শিশুশিল্পী হিসেবে তিনি প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান ১৯৮৫ সালে ‘পেয়ারি বেহনা’ ছবিতে।

হৃতিক রোশন

বলিউডের যে কজন তারকার ছেলে বা মেয়ে নিজেদের প্রমাণ করতে পেরেছেন, তাঁর মধ্যে হৃতিক রোশন অন্যতম। তিনি অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক রাকেশ রোশনের সন্তান। সেই সুবাদে ছোটবেলা থেকেই ছবির সেটে যাওয়া-আসা ছিল হৃতিকের। এভাবেই একদিন ছবিতে অংশগ্রহণ করে ফেলেন তিনি। ১৯৮০ সালে ‘আশা’ ছবিতে শিশুশিল্পী ছিলেন তিনি। আর আজকের হিরো হৃতিক রোশনের সাফল্য প্রায় আকাশছোঁয়া।

আফতাব শিবদাসানি

আফতাব শিবদাসানিকে শিশু অবস্থায় দর্শক দেখেছেন অনিল কাপুরের ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’ ছবিতে। আফতাবের বয়স তখন পাঁচ অথবা ছয়। তবে এর চেয়েও ছোট বয়সে একটি ডায়াপারের বিজ্ঞাপনের মডেল হয়েছিলেন এই নায়ক।

যুগল হংসরাজ

শেখর কাপুরের বিখ্যাত ছবি ‘মাসুম’-এ আবেগঘন চরিত্রে অভিনয় করে অনেকের মনোযোগ কেড়েছিলেন শিশুশিল্পী যুগল হংসরাজ। যদিও নায়ক হিসেবে তিনি একেবারে ফ্লপ।

কুনাল খেমু

কুনাল খেমু আমির খান ও জুহি চাওলার ‘হাম হ্যায় রহি প্যায়ার কে’তে প্রথম বড় পর্দায় অভিনয় করেন। আর আমির ও কারিশমা কাপুরের ‘রাজা হিন্দুস্তানি’তেও ছিলেন একটি গুরুত্বপূর্ণ শিশু চরিত্রে।

নিতু সিং

নিতু সিং এখন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। একসময় জনপ্রিয় নায়িকা ছিলেন। তবে শুরুটা হয়েছিল শিশুশিল্পী হিসেবে। ১৯৬৬ সালে ‘সুরজ’ ছবিতে শিশুশিল্পী ছিলেন নিতু। এরপর ‘দো কালিয়া’-তেও ছোট্ট নিতুর অভিনয় অনেক সুনাম কুড়িয়েছিল।

ঋষি কাপুর

নিতু সিংয়ের মতো তাঁর স্বামী ঋষি কাপুরও শিশুশিল্পী ছিলেন। বাবা প্রয়াত অভিনেতা রাজ কাপুরের ‘মেরা নাম জোকার’ ছবিতে যখন অভিনয় করেন, ঋষির বয়স তখন খুব কম। সেখানে তিনি রাজ কাপুরের ছোটবেলার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।

ঊর্মিলা মাতন্ডকার

ঊর্মিলা মাতন্ডকার ১৯৮০ সালে ‘জাকোল’ ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করেছিলেন। ১৯৮৩ সালে ‘মাসুম’ ছবিতে ‘লাকড়ি কি কাঠি’ গানের কথা নিশ্চয় মনে আছে? সেই গানের তিন শিশুর মধ্যে সবচেয়ে বড়জনই ঊর্মিলা আর ছেলেটি যুগল হংসরাজ।

শ্রীদেবী

প্রয়াত অভিনেত্রী শ্রীদেবী নায়িকা হওয়ার আগে অসংখ্য তামিল ও হিন্দি ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন। লাইট, অ্যাকশন, ক্যামেরা শব্দের সঙ্গে এই বড় পর্দার নায়িকার পরিচয় সেই ১৯৬৩ সালে।

পদ্মিনী কোলহাপুরি

‘সত্যম শিবম সুন্দরম’ ছবিতে নায়িকা জিনাত আমানের ছোটবেলার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন পদ্মিনী কোলহাপুরি। পরে নায়িকা হিসেবেও কাজ করেছেন আরও কয়েকটি ছবিতে।

 

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*