তপন মল্লিক চৌধুরী
রোদ আর তার ক্ষতিকর প্রভাবে আপনার ত্বকে হতে পারে নানান সমস্যা। কারণ গ্রীষ্মকালের রোদ আর তাপমাত্রা আপনার ত্বকের জন্য মোটেও ভাল নয়। তাহলে সূর্যরশ্মি থেকে ত্বক বাঁচানোর উপায়? জেনে নিন কয়েকটি সহজ উপায়। গরমকালে এই কয়েকটি পন্থায় ত্বকের যত্ন না নিলে আপনার ত্বক গ্রীষ্মের দাবদাহ থেকে রক্ষা পাবে না। দেখা দিতে পারে নানা ধরনের সমস্যা।
সানস্ক্রিন ব্যবহার: গ্রীষ্মে ত্বক পরিচর্যার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হল সানস্ক্রিনের ব্যবহার। এসপিএফ ৩০ সমৃদ্ধ উন্নত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। বাইরে বেরনোর কমপক্ষে ১৫ মিনিট আগে ভাল করে সানস্ক্রিন লাগান। আর যদি সারা দিনের জন্য বাইরে যান তাহলে কয়েক ঘন্টা পর পর সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
হালকা মেকআপ: এমন আবহাওয়ায় অতিরিক্ত মেকআপ করা মোটেও ঠিক নয়। কেননা বেশি মেকআপ বাড়তি ঘামের সৃষ্টি করে। দেহের অতিরিক্ত ঘাম ত্বকে নানান সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই ত্বকের যত্নে ঠাণ্ডা ফেস মাস্ক ও ফলের স্ক্রাব ব্যবহার করুন।
গ্রীষ্মবান্ধব প্রসাধনী: শীতকালে যেসমস্ত প্রসাধনী ব্যবহার করতেন সেসব প্রসাধনী বাদ দিয়ে এখন গরম উপযোগী প্রসাধনী ব্যবহার করুন। যেমন- ক্রিম সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজারের পরিবর্তে জেল সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। চাইলে ভারী মেকআপের পরিবর্তে বহুমুখী সিসি ক্রিম ব্যবহার করলেই ভাল।
প্রচুর জল পান: সারাদিনে কমপক্ষে সাত থেকে আট গ্লাস জল পান করুন। এটা শরীর আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে ও তাপমাত্রা ঠিক রাখে। ঘনঘন জল পান যে কেবলমাত্র শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয় তাই নয়, শরীরে যথেষ্ট পরিমাণ জল থাকলে কোনোভাবে ডিহাইড্রেশনের সম্ভবনা থাকে না।
শরীরের আর্দ্রতা: শীত বা গ্রীষ্ম যে ঋতুই হোক না কেন শরীর আর্দ্র রাখা দরকার। শরীরে ফলের লোশন ও মুখে জেল নির্ভর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
রোদ এড়িয়ে চলুন: গ্রীষ্মে ছোট হাতার পোশাক স্টাইলের একটা অংশ। তবে এই স্টাইল কড়া রোদে নিয়মিত অনুসরণ করলে তা ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। গ্রীষ্মের চড়া রোদ শরীরে যাতে সরাসরি না লাগে তার জন্য দেহের নরম ত্বকের অংশ ঢেকে রাখাই ভাল। চোখের নিচের বলিরেখা দূর করতে বাইরে বেরনোমাত্রই সানগ্লাস ব্যবহার করুন।
গরমে আরামে রাখুন ত্বক
গরমের রোদ, তাপ, ঘামে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পায় ত্বক। ত্বককে গরমের দৌরাত্ম্য থেকে বাঁচানোর উপায় কি? জেনে নিন।
গ্রীষ্মকালে আপনার ত্বকে হতে পারে নানাবিধ সমস্যা। শুধু ত্বকই নয়, চুল, নখ এসবও বাদ যায় না। এইসব সমস্যাগুলো থেকে কীভাবে রক্ষা করবেন নিজেকে? জেনে রাখুন কয়েকটি সহজ পন্থা।
গরমে একটা মূল সমস্যা পরিছন্ন থাকা। পরিচ্ছন্ন থাকতে দিনে অন্তত দুই থেকে তিনবার স্নান করা উচিত।
শরীরের যেসব জায়গা ঘাম জমে স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে থাকার সম্ভবনা থাকে, যেমন বাহুর নিচে, গলার নিচে, স্তনের নিচে, আঙ্গুলের ফাঁকে- সেসব জায়গায় আলাদা করে পাউডার লাগাতে পারেন। পাউডার ওইসব জায়গার জমে থাকা ঘাম শোষণ করে জায়গাটি শুকনো রাখে।
রোদে বের হলে অবশ্যই উন্মুক্ত ত্বকে সানস্ক্রিন ক্রিম বা লোশন মাখতে হবে। সানস্ক্রিন নিয়ে এখনও নানান ধরনের ভ্রান্তি আছে। যেমন অনেকেই ভাবেন সান প্রোটেকশন ফরমুলা এসপিএফ-এর মানের উপর রোদ ঠেকানোর হার নির্ভর করে।
বস্তুতপক্ষে এসপিএফ-টেন এবং এসপিএফ-সিক্সটি’র মধ্যে মাত্র দুতিন শতাংশ পার্থক্য থাকে। এসপিএ্ফ-এর মান যতোই হোক এর উপরে এটি কতক্ষণ কাজ করবে এটা নির্ভর করে না। তাই দিনে অন্তত তিন থেকে চারবার সানস্ক্রিন মাখা উচিত।
সানস্ক্রিন মাখলেই যে ত্বকে রোদেপোড়া ভাব আসবে না এমন নয়। সানস্ক্রিনের কাজ ত্বককে রোদের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে রক্ষা করা, যেন ত্বক অকালে বুড়িয়ে না যায় অথবা কোনো রোগে আক্রান্ত না হয়। রোদের হাত থেকে বাঁচতে ছাতা, রোদ চশমা এগুলোকে ভুললে চলবে না।
ঘামের সঙ্গে শরীরের পানি জল হয়ে যায়, এতে শরীর তো বটেই ত্বকও জলশূন্যতায় ভোগে। শরীরকে জল শূন্যতা থেকে বাঁচাতে পর্যাপ্ত জল খেতে হবে, দিনে অন্তত তিন লিটার। ত্বকে মাখতে হবে হালকা ময়েশ্চারাইজার।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে রোদ থেকে রক্ষা—
শসার রস বা গোলাপ জল তুলায় ভিজিয়ে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। এটা বার বার ত্বকে চেপে চেপে লাগিয়ে ত্বককে ঠাণ্ডা রাখা যায়।
ঘর থেকে বের হলে অবশ্যই রোদ চশমা পরতে হবে।
গাড়িতে রোদ আটকানোর জন্য পর্দা ব্যবহার করা যেতে পারে। অন্তত সরসরি যেন রোদ না লাগে সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
Be the first to comment