বৃহস্পতিবার দুপুরে দিল্লির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শুরু হয়েছে কৃষক মিছিল। তাদের গন্তব্য রামলীলা ময়দান। এদিন সকালে কৃষকরা বিভিন্ন ট্রেনে চড়ে আসেন আনন্দ বিহার রেল স্টেশনে। বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এআইএসএ তাঁদের স্বাগত জানায়। দক্ষিণ দিল্লির বিজসাওয়ানেও এসে জড়ো হন অনেক কৃষক। মিছিলের জন্য বিজসাওয়ান ও দ্বারকা লিঙ্ক রোডে যানজট সৃষ্টি হয়। পুলিশ দিল্লিবাসীকে অনুরোধ করেছে, ওই রাস্তাগুলি এড়িয়ে চলুন।
কৃষকদের সংগঠিত করেছে অল ইন্ডিয়া কিষাণ সংঘর্ষ কো-অর্ডিনেশন কমিটি নামে এক সংগঠন। ওই সংগঠনটি দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মোট ২৬০ টি কৃষক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ। মঞ্চের আহ্বায়ক হান্নান মোল্লা বলেন, বিজেপি বা কংগ্রেস, কেউ কৃষকদের সমস্যার দিকে নজর দেয়নি। এখন কৃষিতে যে সংকট দেখা দিয়েছে, তার কারণ হল ভূমি সংস্কারে ব্যর্থতা। কৃষকরা যদি জমি পেতেন তা হলে আজকের সমস্যা সৃষ্টি হত না। স্বাধীনতার পরে কেন্দ্রে যে দল শাসন করেছে, তারা জমিদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে চলত।
বিজেপিকে দোষারোপ করে তিনি বলেন, ২০১৪ সালে তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ২২ টি ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়ানো হবে। আখের জন্য চাষিরা আরও বেশি দাম পাবেন। কিন্তু পরে দেখা গিয়েছে, সবই মিথ্যা প্রতিশ্রুতি। চাষের খরচ বেড়েছে। চাষিরা উৎপন্ন ফসলের উপযুক্ত দাম পাচ্ছেন না। ভোটের আগে বিজেপি জোরদার প্রচার চালিয়ে মানুষকে ঠকাতে চাইছে।
হান্নান মোল্লার কথায়, চাষিরা এখন বুঝতে পারছেন তাঁদের দুর্দশার জন্য দায়ী কে?
দেশে সামগ্রিকভাবে চাষিদের দূরবস্থার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ১৯৯১ সালে দেশে যত কৃষক ছিলেন, ২০১১ সালে তার চেয়ে কমেছিল দেড় কোটি। গ্রামের মানুষ রুজির সন্ধানে বাসস্থান ছেড়ে অন্যত্র পাড়ি দিতে বাধ্য হচ্ছেন। সরকার যদি শিল্পপতিদের ঋণ মকুব করতে পারে, চাষিদের বেলায় কেন পারে না?
কিষাণ মার্চ সম্পর্কে তিনি বলেন, ২৯ নভেম্বর চাষিরা দিল্লিতে জড়ো হবেন। আমাদের ইচ্ছা আছে, বোট ক্লাবে জমায়েত করব। যদি সেখানে সভা করার অনুমতি না মেলে, রামলীলা ময়দানেই করতে হবে। বৃহস্পতিবার কৃষকরা সংসদ অভিযান করতে চান। পার্লামেন্ট স্ট্রিটে তাঁদের জমায়েতে ভাষণ দেবেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
কিছুদিন আগে মুম্বইতে একটি বড় মিছিল করেছিলেন কৃষকরা। এর পরে আর একটি বড় কৃষক মিছিল দেখছে দিল্লি। মিছিলের সংগঠকদের দাবি, অন্তত এক লক্ষ মানুষ আসবেন।
Be the first to comment