সোমবার প্রবল ঠান্ডায় ঘন কুয়াশায় ঢেকে আছে হরিয়ানা, দিল্লি, পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ ও রাজস্থানের বেশ কিছু অংশ। সামনে ৫০০ মিটারের বেশি দেখা যাচ্ছে না। হরিয়ানার কুয়াশা ঢাকা রাস্তায় দুর্ঘটনায় পড়ল ৫০ টি গাড়ি। গাড়িগুলি একে অপরকে ধাক্কা মেরেছে। নিহত হয়েছেন সাতজন। তাঁদের মধ্যে ছ’জনই মহিলা।
হরিয়ানার ঝজ্জরে ওই দুর্ঘটনা হয়। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি স্কুল বাস আছে। দুর্ঘটনার ফলে হাইওয়েতে দু’কিলোমিটার জুড়ে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় মানুষই প্রথমে ত্রাণে হাত লাগান। তাঁরা দুর্ঘটনায় দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া গাড়িগুলিকে ঠেলে সরিয়ে দেন পথের ধারে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, উত্তর ভারতে এমন কুয়াশা থাকবে আরও কয়েকদিন।
গত কয়েক বছরে দেশ জুড়ে কুয়াশার জন্য দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েছে। কেন্দ্রীয় পরিবহণ মন্ত্রকের এক হিসাবে দেখা যায়, ২০১৪ সালের শীতে কুয়াশার সময় প্রতিদিন দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন গড়ে ১৬ জন। ২০১৫ সালে গড়ে দৈনিক মারা যান ২১ জন। ২০১৬ সালে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২৫। ২০১৭ এবং ২০১৮-র হিসাব পাওয়া যায়নি।
২০১৬ সালে সারা দেশে দুর্ঘটনায় যত জন মারা গিয়েছিলেন, তাঁদের অর্ধেক মারা যান উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ এবং হরিয়ানায়।
কুয়াশায় মৃত্যু হয় শীতের দু’-তিন মাসে। ড্রাইভাররা লেন মার্কিং দেখতে পান না। সিগন্যালও দেখতে পান না অনেক সময়। তার ফলেই বেশির ভাগ দুর্ঘটনা হয়। পথ নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ রোহিত বালুজা বলেন, কুয়াশায় কীভাবে সতর্ক হতে হয়, বেশিরভাগ চালক জানেন না। অনেক সময় তাঁরা দ্রুতগতিতে গাড়ি চালান। এমনকী সামনে গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে জানলেও তাঁদের বিশেষ সাবধান হতে দেখা যায় না।
কুয়াশায় দুর্ঘটনা কমানোর জন্য ২০১৫ সালে একগুচ্ছ নির্দেশিকা দিয়েছিল পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট। তাতে বলা হয়েছিল, যে সব রাস্তায় তিনটি বা তার বেশি দুর্ঘটনা হয়েছে, সেখানে পুলিশ মোতায়েন করতে হবে। দুর্ঘটনাপ্রবণ অঞ্চলে রাস্তায় লাগাতে হবে স্পিড ব্রেকার। কিন্তু তার পরেও যে দুর্ঘটনা পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি, তা সোমবারের ঘটনায় বোঝা গেল। পথ নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মত, শুধু পুলিশ মোতায়েন বা স্পিড ব্রেকার তৈরি করলেই হবে না। চালকদের সচেতন করে তোলাই সবচেয়ে জরুরি। কারণ যাত্রীদের নিরাপত্তা নির্ভর করছে তাঁদেরই ওপরে।
Be the first to comment