চিরন্তন ব্যানার্জি:-
গত সপ্তাহের শুক্রবার ছিল গোটা রাজ্যবাসীর কাছে কষ্টের বেদনার, কারণ ওই দিনই রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর অন্তীম যাত্রা। আর তারই মধ্যে খবর আসে আরজি করের সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয়েছিল চিকিৎসকের দেহ। আজ শুক্রবার এই সাত দিনের মধ্যেই সেই ঘটনায় একের পর এক মোড় নিয়েছে। সরানো হয়েছে আরজি করের সুপারকে, তারপর নাটকীয় ভাবে অধ্যক্ষকে ছুটিতে পাঠানো এবং কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত। এরই মধ্যে বুধবার মধ্যরাতে একদল দুষ্কৃতী আচমকাই হাসপাতাল চত্বরে ঢুকে গিয়ে ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয়েছে আন্দোলনের মঞ্চ থেকে শুরু করে হাসপাতালের ওয়ার্ড। তারই প্রতিবাদে শুক্রবার কার্যত অবরুদ্ধ হতে চলেছে শহর কলকাতা। শাসক থেকে বিরোধী সমস্ত দলেরই রয়েছে একাধিক কর্মসূচি।
দোষীদের যাতে শাস্তি হয়, তার জন্য সিবিআই-কে কার্যত সময় বেঁধে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি চান, আগামী রবিবারের মধ্যেই যাতে অভিযুক্তের ফাঁসির ব্যবস্থা করা হয়। এই দাবি নিয়ে শুক্রবার বিকেলে পথে নামবে তৃণমূল। মৌলালী থেকে মিছিল শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে। আর সেই মিছিলে থাকবেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেলা ৩টে শুরু হবে জমায়েত। ৪ টেয় মিছিল বেরিয়ে যাবে ধর্মতলা পর্যন্ত।
পাশাপাশি, বুধবার মধ্যরাতে আরজি করে যে দুষ্কৃতী হামলা হয়, তারপরই বনধের ডাক দিয়েছে এসইউসিআই। শুক্রবার সকাল থেকে ১২ ঘণ্টার বাংলা বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে যে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে, তার প্রতিবাদেই এই বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে।
যদিও নবান্নের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোনও বনধকে মান্যতা দেওয়া হবে না। প্রত্যেক কর্মীকে কর্মস্থলে যেতে হবে বলে নির্দেশিকা জারি করেছে নবান্ন।
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে দিন মৌলালী থেকে ধর্মতলার দিকে হেঁটে যাবেন, অন্যদিকে সে দিনই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির দিকে মিছিল করার কর্মসূচি বিজেপির। জানানো হয়েছে, হাজরা মোড় থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির দিকে এগিয়ে যাবে বিজেপির মিছিল। শুক্রবারই রাজ্যের প্রতিটি জেলায় পথ অবরোধের ডাক দেওয়া হয়েছে বিজেপির তরফে। দুপুর ২ টো থেকে পথ অবরোধের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া, শুক্রবার সরকারি কর্মীদের ২ ঘণ্টা সব কাজ বন্ধ রাখার আর্জি জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে এসইউসিআই-এর ধর্মঘটে সমর্থন না করলেও আলাদা কর্মসূচি ঘোষণা করল সিপিএম। শুক্রবার রাজ্যব্যাপী ধিক্কার দিবস পালনের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তৃণমূল, বিজেপি সব দলকেই কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি করা হয়েছে। পাশাপাশি আরজি করের প্রাক্ত অধ্য সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারির দাবিও জানানো হয়েছে।
এছাড়াও আরজি করের চিকিৎসকের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানাবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। শুক্রবার পেন ডাউন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকেরা।
Be the first to comment