বর্ধমানের মুখ্য ডাকঘরের ভল্ট ভেঙে টাকা লুটের ঘটনায় খোদ পুলিশ সুপার অফিসের নিরাপত্তা রক্ষী-সহ মোট চার জন গ্রেফতার হলো। ধৃত নিরাপত্তা কর্মীর নাম সুরজিৎ সিং মুরা। ধৃত বাকী তিন জনের মধ্যে সুরজিতের বোন অন্নপূর্ণা মণ্ডল, বিবাহ বিচ্ছিন্না। সে সুরজিতের সঙ্গে থাকে। সুরজিতের বাড়ি বাঁকুড়া শহরে। ধৃত গোপীকৃষ্ণ অধিকারী ও সুপ্রিয় মল্লিকের বাড়ি বাঁকুড়ার কোতুলপুরে। সম্পর্কে এরা দুজনেই সুরজিতের নিকট আত্মীয়। অন্নপূর্ণা গৃহকর্ত্রী হলেও সুপ্রিয় ও গোপীকৃষ্ণ পেশায় কাঠ মিস্ত্রি। ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বর্ধমান মুখ্য ডাকঘরের পক্ষ থেকে জেলা কোষাগারে ১ কোটি ১৯ লক্ষ ১৩ হাজার টাকা সিন্দুকে রাখা হয়। নবমীর সকালে ডাকঘরের কর্মীরা সিন্দুক খুলতে গিয়ে দেখেন, সিন্দুকের গচ্ছিত টাকা গায়েব। তোলাপাড় হয় ডাক বিভাগে। পুলিশ আধিকারিক থেকে ডাক বিভাগের আধিকারিকরা সকলেই ছুটে যান কোষাগারে। জেলার মুখ্য ডাকঘরের পক্ষ থেকে বর্ধমান থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়। দেখা যায় মোট ৫৫ লক্ষ ১০ হাজার টাকা চুরি হয়েছে সিন্দুক থেকে। কোষাগারের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল ৩ জন পুলিশ কর্মী। জেলা পুলিশ সুপার কুণাল আগরওয়াল জানান মাস দুয়েক আগে ধৃত সুরজিৎ জেলা কোষাগারের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল। সেই সুযোগে সপ্তমী রাতে কোষাগারে তিন নিরাপত্তা কর্মীর সঙ্গে গল্পগুজব করার সময় সুরজিৎ ও গোপীকৃষ্ণ ভল্ট ভেঙে টাকা লুট করে। অন্নপূর্ণা ও সুপ্রিয় বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল। ঘটনা ঘটার দু-সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পর পুলিশ চার জনকে গ্রেপ্তার করে বাঁকুড়া থেকে। সুরজিতের বাড়ি থেকেই লুটের মাত্র ত্রিশ হাজার টাকা পুলিশ উদ্ধার করে। সুরজিতের আসল বাড়ি পুরুলিয়ায়। শ্বশুর বাড়ি হুগলির শ্রীরামপুরে। কোষাগারে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা তিন পুলিশ কর্মী তন্ময় গোস্বামী, সঞ্জয় সাউ ও তপন কোনাইকে কর্তব্যে গাফিলতির কারণে ক্লোজ করা হয়েছে। গোটা ঘটনায় যেমন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পাশাপাশি টাকা লুটের ঘটনায় মাওবাদী লিঙ্ক খুঁজছে পুলিশ। যদিও পুলিশ সুপার এই বিষয়ে কিছু বলতে অস্বীকার করছেন।
Be the first to comment