জ্যোতি বসু থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লন্ডনে সকলেরই পছন্দের ঠিকানা ‘সেন্ট জেমস কোর্ট’

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:- লন্ডনের সেন্ট জেমস কোর্ট নামটার সাথে জড়িয়ে আছে ইতিহাস ও ঐতিহ্য। এই হোটেলের সঙ্গে যোগ রয়েছে ইংল্যান্ডের রানি এলিজাবেতে প্রথম দরবারের। এরপর টেমস দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল। কিন্তু এলিজাবেথ যুগের অভিজাতদের পছন্দের তালিকায় থাকা শতাব্দী প্রাচীন এই হোটেলটি বরাবর বিশ্ববরেণ্য রাজ নেতাদের স্বাগত জানিয়ে এসেছে। এই হোটেলের ইতিহাসের পাতায় জ্বলজ্বল করে স্বর্ণাক্ষরে রয়েছে বাংলার নামও। বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী থেকে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী সকলের পছন্দের আস্তানা মধ্য লন্ডনের এই শতাব্দী প্রাচীন হোটেলটি।
ইতিহাস বলছে, আট, নয়ের দশকে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যস্ততা কাটিয়ে গ্রীষ্মের অবকাশ কাটাতে প্রায়ই বিলেত যেতেন বাম আমলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। সেই সময় তিনি উঠতেন তাজ গ্রুপের অন্তর্গত এই মধ্য লন্ডনের হোটেলটিতে। তেমনি বাংলার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী এই নিয়ে তৃতীয়বার লন্ডন সফরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে ২০১৫ এবং ২০২৩ সালে ব্রিটিশ রাজধানীতে গিয়েছিলেন মমতা। ২৫ সালে মার্চ মাসেও ৬ দিনের সফরে লন্ডনে পৌঁছেছেন তিনি। গত দুবারের মতো এবারও মধ্য লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী সেন্ট জেমস কোর্ট হোটেলেই উঠেছেন মমতা।
প্রসঙ্গত, শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা জ্যোতি বসু নন, এই ঐতিহ্যবাহী হোটেল অতীতে স্বাগত জানিয়েছে নেলসন ম্যান্ডেলা, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র, প্রিন্সেস ডায়ানা, প্রিন্স হ্যারি, ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি কেআর নারায়ণন-সহ বিশ্বখ্যাত নেতাদের৷ এছাড়াও বাকিংহাম প্যালেস এবং সেন্ট জেমস পার্কের কাছে অবস্থিত এই হোটেলটি ভ্রমণপিপাসু মানুষদের কাছেও অত্যন্ত পছন্দের।
তথ্য বলছে, আজকের এই পাঁচতারা হোটেলের ইতিহাস সরাসরি ইংল্যান্ডের রাজ পরিবারের সঙ্গে যুক্ত। যা কয়েকশো বছরের পুরনো। সেন্ট জেমস কোর্টের ইতিহাস টিউডর যুগের ইংল্যান্ড এবং রানি এলিজাবেথ প্রথমের দরবারের সঙ্গে জড়িত। সেই সময় এক অভিজাত জমিদার ও রানির কোষাধ্যক্ষ লর্ড ড্যাকার ওয়েস্টমিনস্টারের ‘টোথিল ফিল্ডস’-এ একটি ভিক্ষাশ্রম তৈরির পরিকল্পনা করেন। পরে এখানে ইমানুয়েল ভিক্ষাশ্রম নামে ছোট ছোট কটেজ তৈরি করা হয়। যেখানে ২০ জন শিশু আশ্রয় ও শিক্ষার সুযোগ পেত।
১৮৯৭ সালে রাজকীয় প্রকৌশলী বাহিনীতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী জার পাভলে এই জায়গাটি অধিগ্রহণ করেন। এখানেই বর্তমানে দু’টি তাজ হোটেল রয়েছে। একটি তাজ ৫১ বাকিংহাম গেট স্যুইটস অ্যান্ড রেসিডেন্সেস এবং দ্বিতীয়টি সেন্ট জেমস কোর্ট ৷ ১৯৮২ সালে ইন্ডিয়ান হোটেলস কোম্পানি লিমিটেড অর্থাৎ তাজ হোটেলস রিসর্টস অ্যান্ড প্যালেসেস এই হোটেলটিকে অধিগ্রহণ করে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*