অতিরিক্ত আরাম পেতে গিয়ে যে এমন দশা হবে তা কে জানত? বান্ধবীর সঙ্গে শরীরের খেলায় মেতে ওঠার আগে ঘুণাক্ষরেও টের পাননি যুবক।
কন্ডোম থেকেও অ্যালার্জি? না তবে এটা যে সে কন্ডোম নয়। বাজার চলতি বিজ্ঞাপন দেখে অতিরিক্ত আরাম পেতে ‘এক্সটেন্ডেড কন্ডোম’ কিনেছিলেন যুবক। তাতেই হয় এই বিপত্তি। প্রথমে চুলকানি। পরে জ্বালা ভাব, শেষে যন্ত্রণায় কাতর হয়ে যুবক যখন চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হন, তখন তাঁর গোটা যৌনাঙ্গ জুড়ে দগদগে ঘা। চামড়ার বেশ কিছুটা অংশ কালো হয়ে গিয়েছে।
ঘটনাটা লখনউয়ের। কিং জর্জেস মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে আপাতত সেই যুবকের চিকিৎসা চলছে। দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকদের একজন জানিয়েছেন, ওই এক্সটেন্ডেড কন্ডোমের বিশেষ রাসায়নিকের ক্রিয়ায় ত্বকের কোষে মারাত্মক সংক্রমণ হয়েছে। ফলে যৌনাঙ্গের ত্বক পচতেও শুরু করেছে। যার ফলেই ওই যুবকের যৌনাঙ্গের বেশ কিছুটা অংশ কালো হয়ে গেছে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এই সংক্রমণের নাম পেনাইল গ্যাংগ্রিন (penile gangrene)। অর্থাৎ, চলতি ভাষায় যাকে বলে যৌনাঙ্গের ঘা। সঠিক সময় চিকিৎসা শুরু না হলে এই সংক্রমণের কারণে যৌনাঙ্গ বাদ দিতেও হতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
কী এই পেনাইল গ্যাংগ্রিন?
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি একধরণের সংক্রমণ। নানা কারণে হতে পারে এই রোগ। মূলত অ্যালার্জি সংক্রমণের কারণে এই রোগ বাসা বাঁধে। একে Fournier’s Gangrene বলা হয়। সংক্রামিত স্থানে পলিমাইক্রোবিয়াল ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়ে এই রোগ ভয়াবহ আকার নেয়।
ওই যুবক যে কন্ডোম ব্যবহার করেছিলেন তাতে ছিল Benzocaine নামে একধরণের রাসায়নিক। এটি লুব্রিক্যান্ট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই রাসায়নিকই যৌনাঙ্গের কোষে সংক্রমণের জন্য দায়ি।
কী উপসর্গ এই রোগের?
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, penile gangrene বা Fournier’s Gangrene খুবই বিরল। ১৯৯১ সালে চার জন রোগীর মধ্যে এই সংক্রমণ দেখা গিয়েছিল। যৌনাঙ্গে তীব্র জ্বালা, যন্ত্রণার পাশাপাশি যৌনাঙ্গ ফুলে ওঠে এই সংক্রমণে। চামড়া শুকিয়ে যেতে শুরু করে। সংক্রমণ বাড়লে যৌনাঙ্গের বাইরের চামড়ায় পচন শুরু হয়। ডায়াবেটিস রোগীদের এই সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেক বেশি। তা ছাড়া বাজার চলতি সেক্স টয়, বা কিছু কিছু কন্ডোম থেকেও এই রোগ ছড়াতে পারে।
আক্রান্ত যুবক এখন অনেকটা স্থিতিশীল বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তার যৌনাঙ্গের পচে যাওয়া ত্বক বাদ দিয়ে সেখানে স্কিন গ্রাফটিং করতে হয়েছে। অতএব, আরাম পেতে গেলে সঠিক জিনিসের নির্বাচন অতি জরুরি বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা।
Be the first to comment