উনিশের ভোটের আগে আসন ধরে ধরে ঘুঁটি সাজানো শুরু করে দিল বিজেপি। মাস খানেক আগে বাংলা সফরে এসে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ খোলাখুলিই জানিয়েছিলেন, এ রাজ্যে এ বার বাইশটি আসনে নজর রয়েছে তাঁদের। বিজেপি-র ড্রয়িং বোর্ডে তাকালে বোঝা যাবে তাঁদের নিশানায় রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রও।
যেমন ভাবা, কাজ এগোনোর চেষ্টা হচ্ছে তেমন ভাবেই। ঘাটালের বর্ষীয়াণ কংগ্রেস নেতা ও সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির সদস্য জগন্নাথ গোস্বামীকে শুক্রবার বিজেপি-তে সামিল করালেন মুকুল রায় ও কেন্দ্রে শাসক দলের সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। দু’দিন আগে মুকুলবাবুকে লোকসভা ভোটে বিজেপি-র ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব দিয়েছেন অমিত শাহ। তবে তার অনেক আগে থেকেই জগন্নাথ গোস্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিলেন মুকুলবাবু। জগন্নাথবাবু ছাড়াও এ দিন বিজেপি-তে যোগ দেন কয়েকশো কংগ্রেস কর্মী।
প্রশ্ন উঠতে পারে, লোকসভা ভোটে কেন ঘাটালকে নিশানা করেছে বিজেপি?
দলের রাজ্য নেতারা বলছেন, এর উত্তর সহজ। তৃণমূল কেবল সংখ্যালঘু ভোটের ভরসায় রয়েছে। ঘাটালে সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে ১৩ শতাংশ। মানে শুধু সংখ্যালঘু ভোটের ভরসায় তৃণমূল সেখানে জিততে পারবে না।
জেলার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, স্বাধীনতার পর থেকে ঘাটালে বরাবরই কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি ছিল। কিন্তু তা ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু হয়ে পড়ছিল। মানস ভুইঞাঁ কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর সামগ্রিক ভাবে পশ্চিম মেদিনীপুরে কংগ্রেসের সংগঠনে ধাক্কা লেগেছে। কিন্তু জগন্নাথবাবু ব্যক্তিগত ভাবে ঘোরতর তৃণমূল বিরোধী নেতা। জেলার রাজনীতিতে ভাল সংগঠক বলেই পরিচিত। লোকসভা ভোটে কী হবে পরের কথা, আপাতত বলা যায় ঘাটালে এক জন ভাল সংগঠক পেল বিজেপি।
এ দিন বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার তৃণমূল সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন জগন্নাথবাবু। বলেন, “বাংলায় একটা ফাসিস্ত সরকার চলছে। এদের যত দ্রুত বিদেয় করা যায়, ততই বাংলার মঙ্গল।”
অন্যদিকে মুকুলবাবু বলেন, বিরোধী শিবির এমনকি তৃণমূলের অনেক নেতা বিজেপি-র সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। উনিশের ভোটের আগে কংগ্রেস, সিপিএম, তৃণমূল ছেড়ে বহু নেতা কর্মী বিজেপি-তে সামিল হবেন। কারণ, বাংলায় তৃণমূল সরকারকে বিদায় করার একটা মুড তৈরি হয়ে গিয়েছে। সেই দেওয়াল লিখন হয়তো তৃণমূলেরও অনেকেই দেখতে পাচ্ছেন।
Be the first to comment