তিনটি গোখরো সাপ পিটিয়ে মারার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল যুবককে। ধৃত নান্টু ঘোষ ধূপগুড়ির ঘোষপাড়া এলাকার বাসিন্দা। সূত্রের খবর, গত শনিবার ও রবিবার, দু’দফায় ওই তিনটি গোখরো সাপকে পিটিয়া মারে নান্টু। তার পরে সেই সাপ মারার ছবি আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করে। সেই ছবি ভাইরাল হওয়ার পরে বন দফতরের হাতে পৌঁছয়। এর পরেই ডিএফও তদন্তের নির্দেশ দেন। শেষমেশ বিন্নাগুড়ি ওয়াইল্ড লাইফের রেঞ্জ অফিসারের উদ্যোগে ধরা পড়ে অভিযুক্ত নান্টু।
রেঞ্জ অফিসার জলধর রায় জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনটি সাপের দেহ উদ্ধার করা হয়। দেহগুলির ময়না-তদন্ত হবে। নান্টুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বন্যপ্রাণ আইনে মামলাও রুজু হয়েছে জলপাইগুড়ি আদালতে।
ওই এলাকার এক যুবক রাজা ঘোষ জানায়, নান্টুর সাপ মারার প্রতিবাদ করেন তাঁরা। কিন্তু অভিযোগ, নান্টু উল্টে দুর্ব্যবহার করে বলে, “বাড়িতে সাপ ঢুকলে মারব না তো কী করব, দুধ-কলা দিয়ে পুষব?” জানা গেছে, নান্টু এর আগেও মোট ৫০টি সাপ মেরেছে।
শিলিগুড়ির অন্যতম পরিবেশকর্মী অনিমেষ বসু জানান, বন্যপ্রাণ আইনের এই প্রয়োগ অত্যন্ত ইতিবাচক। এরকম উদাহরণ আরও তৈরি হলে, নিরীহ প্রাণীকে মেরে ফেলার আগে দু’বার ভাববে মানুষ। তাঁর ব্যাখ্যা, বাস্তুতন্ত্রে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সাপ। তাই সেই শৃঙ্খলা রক্ষার জন্যই সাপকে বাঁচানো উচিত। তাঁর কথায়, “সাপ অত্যন্ত নিরীহ প্রাণী। নিজে আক্রান্ত না হলে কখনও পাল্টা আক্রমণ কর না। তবু সাপকে অকারণে ভয় পাওয়ার একটা ধারণা মানুষের মধ্যে গেঁথে গিয়েছে।”
তবে সেই সঙ্গে অনিমেষবাবুর আশা, এখন তা-ও এ ধরনের ঘটনায় মানুষের সচেতনতা বেড়েছে। কোথাও সাপ পাওয়া গেলে অনেকেই খবর দেন বন দফতরে। তার পরেও যাঁরা এ সবের ধার ধারেন না, অকাতরে প্রাণী হত্যা করেন, তাঁদেপ বন্যপ্রাণ আইনে শাস্তি হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
Be the first to comment