প্রাচীন একটা বাদ্যযন্ত্রে নতুন একটি মূর্ছনা

Spread the love
রিষড়া, শ্রীরামপুর বা বৈদ্যবাটির বাসিন্দাদের একটা বড় অংশই কিন্তু পাকাপাকি ভাবে গঙ্গা পেরোতে তেমন আগ্রহ বোধ করেন না। নিউটাউন হোক বা নিউআলিপুর, পাটুলি হোক বা সোনারপুর। অথচ যৌথ পরিবার ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে। তাদের নতুন আস্তানা দরকার। সেই আস্তানা কিন্তু হওয়া চাই নিজেদের চেনা পরিবেশে।
গঙ্গা তীরবর্তী হুগলির যে কয়েকটি অঞ্চল শিল্প-সংস্কৃতি চর্চার মানচিত্রে উল্লেখযোগ্য, তার মধ্যে উপরের দিকেই কোন্নগরের নাম। কয়েকশ বছরের প্রাচীন শহর। পরতে পরতে ইতিহাস। আর এই জনপদেই আধুনিক নগরজীবনের সমস্ত উপকরণ নিয়ে মাথা তুলছে জয় বিনায়ক গোষ্ঠীর রিয়েল এস্টেট প্রকল্প ‘গোল্ডেন একার্স’।
কথায় বলে, ‘গঙ্গার পশ্চিম কূল, বারাণসী সমতুল।’ এ অঞ্চলের নাগরিকরা তাঁদের বেড়ে ওঠার জায়গা ছেড়ে অন্যত্র খুব একটা যেতে চান না। চান তাঁদের নিজেদের ঘরানাতেই নতুন একটা ঠিকানা পেতে। আধুনিক নগরজীবনের স্বাচ্ছন্দ্য পেতে চান জেলাতেই। তাঁদের জন্য গোল্ডেন একার্স নতুন একটি স্বপ্নের নাম।
গত এক-দেড় দশকে অন্যান্য মফস্বলের মতো এই শহরেও ফ্ল্যাট বাড়ি কম হয়নি। সেই সঙ্গে ঝলমলে আলো, ঝকঝকে রাস্তায় চেহারা বদলেছে শহরের। প্রায় সমস্ত বহুজাতিকের আউটলেট তৈরি হয়েছে গত পাঁচ-সাত বছরে। এর মধ্যেই শহরের মুকুটে নতুন পালক গোল্ডেন একার্স।
কোন্নগর যে যে কারণে লোকের মুখে মুখে ফেরে তার মধ্যে অন্যতম শকুন্তলা কালী উৎসব। স্টেশন থেকে পূর্বদিকে খুব বেশি হলে মিনিট চারেক হাঁটলেই শকুন্তলা কালীমন্দির। ঠিক মন্দিরের গা দিয়েই ঢুকে গেছে ১৫ফুটের চওড়া রাস্তা। কয়েকফুট হাঁটলেই গোল্ডেন একার্স। দু’দিকে সবুজের হাতছানি। মাঝে আধুনিক নগরজীবনের সবটুকু।
নির্মাতা সংস্থার এক আধিকারিকের কথায়, ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হবে এই কর্মযজ্ঞ। মিস্ত্রী, শ্রমিক মিলিয়ে প্রায় কয়েকশ মানুষ প্রাণপাত পরিশ্রম করছেন রাত দিন এক করে। সঙ্গে রুটিন করে ইঞ্জিনিয়ারদের তদারকি। যাকে বলে দাঁড়িয়ে থেকে কাজ করানো। সিমেন্ট-বালি-স্টোনচিপসের অনুপাত এ দিক-ও দিক হলেই ঢালাই মেশিনের প্রবল শব্দকে উপেক্ষা করে নির্মীয়মান বহুতলের উপর থেকে সুপারভাইজারের চিৎকার। ইশারায় বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা, ওইটা ঠিক হচ্ছে না। এইটা এইভাবে করতে হবে…..
চার একর জায়গায় তৈরি হচ্ছে অত্যাধুনিক এই হাউজিং। সব মিলিয়ে আটটি টাওয়ারে (জি প্লাস ফোর) পাঁচশ ফ্ল্যাট। এখনও পর্যন্ত লাগোয়া অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বড় হাউজিং কমপ্লেক্স হিসেবে গড়ে উঠছে গোল্ডেন একার্স। থাকছে তিন ধরনের ফ্ল্যাট। ওয়ান বিএইচকে (৪৬৩-৪৬৬স্কোয়ার ফুট) ফ্ল্যাটের দাম ১০লক্ষ ৮৮ হাজার টাকা। টু বিএইচকে ফ্ল্যাট আবার তিন ধরনের। ৬২০, ৭২৬ এবং ৭৩৮ স্কোয়ারফুটের। দামও ১৪লক্ষ ৫৭হাজার থেকে ১৭লক্ষ ৩৪হাজার টাকার মধ্যে। থ্রি বিএইচকে ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রেও রয়েছে রকমফের। কোনওটা ৯৩২ স্কোয়ারফুট কোনওটা আবার ৯৩৫ বা ৯৪৫ স্কোয়ারফুট। ২১লক্ষ ৯০হাজার টাকায় মিলবে থ্রি বিএইচকে ফ্ল্যাটের চাবি। বাথরুমের ফ্লোর থেকে দেওয়াল, রান্না ঘরের কনস্ট্রাকশন সবই অত্যন্ত উচ্চমানের সামগ্রী দিয়ে সাজানো হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থার আধিকারিকরা।
আর পাঁচটা অত্যাধুনিক হাউজিং কমপ্লেক্সে যা যা থাকে, মোটামুটি সবই থাকছে গোল্ডেন একার্সে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জিম, শিশুদের খেলার জায়গা, বয়স্কদের জন্য আড্ডা জোন, সুইমিংপুল থেকে শুরু করে লাইব্রেরী। সবই থাকছে এক সীমানায়।
স্টেশন থেকে হাঁটা পথ। ২বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে স্কুল, কলেজ হাসপাতাল। গঙ্গা থেকে দূরত্ব দেড় কিলোমিটার। যোগাযোগ ব্যবস্থাও উন্নত। সব মিলিয়ে শান্ত ছাপোষা মফস্বলের বুকে নিরাপদ ও আধুনিক নগরজীবনের মধ্যবিত্ত- স্বপ্নপূরণ। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাজ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*