ত্রিপুরা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক গৌতম দাস বৃহস্পতিবার কলকাতার নার্সিংহোমে প্রয়াত হয়েছেন। তিনি কোভিডের জেরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছিল। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। তাঁর স্ত্রী তপতী সেন, কন্যা স্বাগতা দাস ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা রয়েছেন।
সূত্রের খবর, আগস্টের শেষদিকে গৌতম দাসের কোভিড ধরা পড়ে।এরপর তাঁকে আগরতলার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার ক্রমেই অবনতি হতে থাকে। এরপর তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করা হয় গত ৬ই সেপ্টেম্বর। এদিন সকাল ৭টা ২০ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
দীর্ঘদিন বাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। ১৯৬৮ সালে তিনি সিপিএমে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৮৬ সালে তিনি ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির সদস্যপদ লাভ করেন। ১৯৯৪ সালে তিনি রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হয়েছিলেন। এরপর ২০১৮ সালে তিনি রাজ্য সম্পাদকের পদ পান। ২০১৫ সালে ২১তম পার্টি কংগ্রেসে তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যও হয়েছিলেন। ১৯৭৯ থেক ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি পার্টির মুখপত্র দেশের কথার সম্পাদকও ছিলেন। আগরতলা প্রেস ক্লাবেরও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন তিনি। সিপিএমের পলিটব্যুরো তাঁর প্রয়ানে শোক প্রকাশ করেছে ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে।
তবে রাজনীতিতেই সীমাবদ্ধ রাখেননি নিজের কাজ। ত্রিপুরায় সিপিএমের মুখপত্র “ডেইলি দেশের কথা” নামক সংবাদকপত্রেরও সম্পাদক ছিলেন তিনি। ২০১৮ সালেই তিনি বিজন ধরের হাত থেকে দলের মুখপত্র পরিচালেনের দায়িত্ব নেন।
বর্তমানে রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত ত্রিপুরা। গত সপ্তাহেই বিজেপির সঙ্গে সিপিএমের সদস্যদের সংঘর্ষ ও দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটে। সিপিএমের সম্মেলন প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে ত্রিপুরায়। এই পরিস্থিতিতেই রাজ্য সম্পাদকের মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে পরবর্তী সম্পাদক কে হবেন, তা নিয়ে।
সূত্রের খবর, নতুন সম্পাদক হিসাবে নাম উঠে আসছে জিতেন্দ্র চৌধুরীর। সম্প্রতিই ত্রিপুরায় হিংসার ঘটনায় সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ও ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার যে সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন, তাতেও জিতেন্দ্র চৌধুরিকে দেখা গিয়েছিল। সেই সময় থেকেই নতুন সম্পাদক হিসাবে তঁর নাম ঘিরে জল্পনা শুরু হয়। গৌতম দাসের প্রয়াণের পর দলের সম্পাদকের দায়িত্ব তিনিই পান কিনা, এ বার তা দেখার অপেক্ষা।
Be the first to comment