সোমবার কংগ্রেস নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ গুলাম নবি আজাদকে জম্মু ও কাশ্মীরের চারটি জেলায় যাওয়ার অনুমতি দিল সুপ্রিম কোর্ট। শ্রীনগর, বারামুল্লা, অনন্তনাগ ও জম্মুতে যেতে পারবেন তিনি। ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, এস এ বোবদে ও এস আবদুল নাজিরের বেঞ্চ এই নির্দেশ দেয়। উল্লেখ্য, রবিবারই কাশ্মীরে গিয়ে নিজের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিল জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন এই মুখ্যমন্ত্রী। আজ সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি হয় আদালতে।
শুনানিতে গুলাম নবি আজাদের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। আদালতে তিনি দাবি করেন, তাঁর মক্কেল ব্যক্তিগত কাজে ও পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে কাশ্মীরে যেতে চান। তাঁর এই সফরের সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগাযোগ নেই। শীর্ষ আদালত গুলাম নবি আজাদকে কাশ্মীরে যাওয়ার অনুমতি দিলেও সেখানে তিনি কোনও বক্তব্য রাখতে পারবেন না ও জনসভা করতে পারবেন না। আদালতের এই নির্দেশের পর গুলাম নবি আজাদ বলেন, কাশ্মীরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ায় আমি শীর্ষ আদালতের কাছে কৃতজ্ঞ। আমি খুশি যে, প্রধান বিচারপতি স্বয়ং বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে তিনি নিজেও কাশ্মীরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর তিনবার কাশ্মীরে ঢোকার চেষ্টা করলেও রাজ্য প্রশাসন তাঁকে ফের দিল্লিতে ফেরত পাঠায়। জম্মু ও কাশ্মীরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে এই যুক্তিতেই তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ৮ অগাস্ট ও ২০ অগাস্ট শ্রীনগর বিমানবন্দরে নামলেও সেখান থেকেই তাঁকে ফেরত পাঠিয়েছিল জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন । একই যুক্তিতে জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুখ আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা, মুফতি মহম্মদ সৈয়দদের আটকায় সরকার। পাবলিক সেফটি অ্যাক্টের অধীনে এই প্রতিরোধমূলক আটক করা হয়েছে। এই অ্যাক্টের অধীনে বিনা বিচারে একজনকে দু’বছর পর্যন্ত আটক করে রাখতে পারে সরকার।
এদিকে আজ আদালত জানায় জম্মু ও কাশ্মীরের সিপিআই(এম) নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক মহম্মদ ইউসুফ তরিগামিকে কাশ্মীরে ফেরার অনুমতি দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এর আগে গৃহবন্দী ওই নেতাকে অসুস্থতার কারণে দিল্লির AIIMS-এ ভর্তি করা হয়েছিলো। সিপিআই(এম)-এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির আবেদনের ভিত্তিতে ৫ সেপ্টেম্বর শীর্ষ আদালত কেন্দ্রকে নির্দেশ দেয়, যেন দ্রুত তরিগামিকে শ্রীনগর থেকে দিল্লির AIIMS-এ ভর্তি করা হয়। ৫ অগাস্ট থেকে কাশ্মীরে আটক ছিলেন তরিগামি। সেই সময় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান ইয়েচুরি। তবে দু’বারই তাঁকে শ্রীনগর থেকেই ফিরে যেতে হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের থেকে ছাড়পত্র পেয়ে তরিগামিকে দেখতে গেছিলেন ইয়েচুরি।
Be the first to comment