গ্লোবাল টেররিস্টের তালিকায় থাকা জঙ্গি নেতা হাফিজ সইদের হয়ে এবার খোলাখুলি সওয়াল করলো পাকিস্তান। হাফিজ সইদকে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে দেওয়া হোক, এই আবেদন জানিয়ে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে চিঠি লিখেছে পাকিস্তান। ১৫ অগাস্ট চিঠিটি নিরাপত্তা পরিষদে পাঠানে হয়েছিলো। চিঠিতে লেখা, হাফিজ সইদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা চার। তাদের ভরণপোষণের দায়িত্ব হাফিজের উপর। তাই পরিবারের ন্যূনতম খরচ চালাতে তাকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে দেওয়া হোক। উল্লেখ্য, রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ১২৬৭ নম্বর রেজলিউশনে হাফিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়।
পাকিস্তান সরকারের চিঠিতে হাফিজকে পাকিস্তানি নাগরিক হিসাবে উল্লেখ করে লেখা হয়েছে, সে ১৯৭৪ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত লাহোরের ইউনিভার্সিটি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে অধ্যাপনা করেছে। সেখানে হাফিজ অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পদে ছিল। দীর্ঘ ২৫ বছর সেখানে কাজ করায় হাফিজ পেনশন পায়। তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পেনশন বাবদ ৪ লাখ ৫৭ হাজার পাকিস্তানি রুপি জমা রয়েছে। তাই পরিবারের খরচ চালাতে হাফিজকে ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে দেওয়া হোক। সে যাতে সেখান থেকে দেড় লাখ পাকিস্তানি রুপি তুলতে পারে সেই অনুমোদন দেওয়া হোক।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর মুম্বই হামলার নেপথ্যে ছিল লস্কর-ই-তৈবার প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ। সম্প্রতি কাশ্মীরে পুলওয়ামা হামলার পাশাপাশি ২০০১ সালে সংসদভবনে হামলার মাস্টারমাইন্ডও ছিল এই জইশ প্রধান। নতুন সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মাধ্যমে ভারত ইতিমধ্যেই লস্কর-ই-তৈবার প্রতিষ্ঠাতা হাফিজকে জঙ্গি ঘোষণা করেছে। তাকে গ্লোবাল টেররিস্টের তালিকায় রেখেছে অ্যামেরিকাও। ২০১২ সাল থেকে ওই জঙ্গিনেতার মাথার দাম ১ কোটি মার্কিন ডলার।
নিরাপত্তা পরিষদকে পাঠানো চিঠি সামনে আসতেই পাকিস্তান যে জঙ্গিদের মদত দেয় তা ফের সামনে এলো। ১৭ জুলাই একটি সন্ত্রাসবাদ মামলায় হাফিজকে গ্রেফতার করে পাকিস্তান প্রশাসন। হাফিজের বিরুদ্ধে মোট ২৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে লাহৌর, গুজরানওয়ালা ও মুলতানে। তাকে বিশেষ নিরাপত্তা বলয়ে লাহোরের লখপত জেলে রাখা হয়েছে। কূটনৈতিক ও বিশ্ব রাজনৈতিক মহলের মত, রাষ্ট্রসংঘকে চিঠি লিখে এক জঙ্গি নেতাকে সাহায্য করার এই চেষ্টাতেই স্পষ্ট যে, পাকিস্তান জঙ্গিদের মদত দেওয়া থেকে বিরত থাকবে না।
Be the first to comment