বলাগড়ে ষষ্ঠ শ্রেণির স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুন কাণ্ডে অভিযুক্তদের ফাঁসির সাজা শোনাল আদালত। ২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বর খুন করে ধর্ষণ করা হয় ওই স্কুল ছাত্রীকে। দীর্ঘ ৫ বছর পর সেই মামলাতেই দুই অভিযুক্তকে ফাঁসির সাজা শোনালো চুঁচুড়া আদালত। অন্য এক অভিযুক্ত নাবালক হওয়ায় জুভেনাইল আদালতে তাঁর বিচার চলছে।
২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বর ধর্ষণ ও খুনের দু’দিন পরে ১৪ ডিসেম্বর উদ্ধার হয় ওই ছাত্রীর মৃতদেহ। তদন্তে দেখা যায় গলা টিপে খুন করা হয়েছিল ওই ছাত্রীকে। তদন্তে উঠে আসে ১২ ডিসেম্বর রাতে প্রাইভেট পড়ে ফিরছিল ওই নাবালিকা। গৌরব মণ্ডল, কৌশিক মালিক ও এক নাবালক রাস্তাতেই ওই স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু চেঁচামেচি করে ওই নাবালিকা বাধা দেওয়ায় ঠাণ্ডা মাথায় তাঁকে গলা টিপে খুন করে তিনজন। এরপর মৃতদেহ জঙ্গলে ফেলে রেখে অন্য জায়গা থেকে ৩ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে নাবালিকার পরিবারকে ফোন করে তাঁরা।
মুক্তিপণ চাওয়ার পরে খুনের প্রমাণ ও দেহ লোপাটের জন্য মাটিতে গর্ত করে দেহ পুঁতে দেয় আসামীরা। এমনকি দেহ পুঁতে দেওয়ার আগে ধর্ষণও করা হয়। অন্যদিকে মুক্তিপণের ফোন পাওয়ার পরেই থানায় মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার ডায়রি করে নাবালিকার পরিবার। ১৪ তারিখ ইটভাঁটার পিছনে গঙ্গার পাড়ে মাটি খুঁড়ে ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। অভিযুক্তেরা স্বীকার করে, তারা খুন ও তারপরে ধর্ষণ করেছে ওই কিশোরীকে।
এই মামলায় মোট ৩৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে চুঁচুড়া আদালত। গত ২২ জানুয়ারি চুঁচুড়া আদালতের অ্যাডিশন্যাল ডিস্ট্রিক্ট অ্যান্ড সেশন জাজ মানস রঞ্জন সান্যাল দুই অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেন। সোমবার দু’জনকেই ফাঁসির সাজা শোনানো হয়।
আদালতের এই রায়কে সাহসী পদক্ষেপ বলে মানছেন অনেকেই। বেশ কয়েকজনের বক্তব্য অপেক্ষাকৃত নিম্ন আদালতও যে এই ধরণের অপরাধের ক্ষেত্রে দৃঢ় পদক্ষেপ বজায় রাখছে, তা সমাজের জন্য আদতে হিতকর।
উল্লেখ্য, ২০১৯-এর শেষে হায়দরাবাদে ধর্ষণ কাণ্ডে নড়ে উঠেছিল গোটা দেশ। দেশ থেকে ধর্ষণ নামক অপরাধকে ছুঁড়ে ফেলতে এককাট্টা হচ্ছিলেন সাধারণ মানুষও। দেশজুড়ে ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবি ক্রমশই জোরালো হয়ে উঠছিল, যদিও পড়ে ঘটনা পুননির্মাণের সময় পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় ওই অভিযুক্তদের।
অন্যদিকে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি হতে চলেছে নির্ভয়া ধর্ষণ ও খুনকাণ্ডের ৪ দোষীদের ফাঁসি। বারবার সেই ফাঁসির বিরুদ্ধে ধর্ষণকারীরা আদালতে আবেদন জানালেও তাতে টলতে নারাজ আদালত। স্পষ্ট নাকচ করে দেওয়া হয়েছে সেই আবেদন।
Be the first to comment