মিতালী মিত্র : আকাঙ্ক্ষা আবাসনের হর্তাকর্তা এবার মেয়েরা। সম্পাদক মুনমুন । ছোটো ছোটো দলে ভাগ হয়ে সব কাজ সামলাচ্ছেন। তবে পুরুষবর্জিত পুজো তো আর নয়, তাই বলা ভালো মিলেজুলে সব কাজ চলছে। প্রধান ভূমিকায় মেয়েরাই। পাশাপাশি আবাসনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা রয়েছে। সে মণ্ডপ থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সব বিষয়েই। সানরাইজ পয়েন্ট, ইস্টার্ন হাই—এমনই অনেক আবাসনেও পুজো হয়। হিডকোর প্রথম তৈরি আবাসন বলাকাতেও এবার বেশ জাঁকিয়ে পুজো হচ্ছে।
নিউ টাউনের প্রান্তসীমায় গড়ে উঠেছে অনেক বহুতল। তার মধ্যে ও নিজস্ব ঐতিহ্য বজায় রেখেছে নপাড়া বারোয়ারির পুজো কমিটি। এখানে আজানের সুরে সকাল হলে সন্ধ্যা নামে শাঁখের গাম্ভীর্যে। কমিটির পক্ষ থেকে মৃত্যুঞ্জয় দাস জানান, দুর্গাপুজোয় ধর্মীয় কোনও ব্যারিকেড আমরা মানি না। ঈদও আমাদের, পুজোও আমাদের। পাড়ার হিন্দু-মুসলমান সকলে মিলে উৎসব করি।
নিউ টাউনের সরকারি নাম হ্যাপি সিটি। তো উৎসবের মরশুমে কথাটি যেন আরও স্পষ্ট করে ধরা পড়ে। সুখী শহরের আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়ায় আনন্দের শোরগোল। অনেক নতুন আবাসন যেমন গড়ে উঠেছে, তেমনই আদি বাসিন্দাদের অনেকেই রয়ে গিয়েছেন। মিশ্র প্রকৃতির, মিশ্র ভাষাভাষি, এমনকি ধর্মবিশ্বাসেও তাঁদের মধ্যে প্রভেদ রয়েছে। তবু দুর্গোৎসব এসব কিছুরই প্রভাব পড়ে না। এখানে পুজো মানেই সকালে অঞ্জলি, সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে দুটি বেলা মণ্ডপে একসঙ্গে পাতপেড়ে খাওয়া। নবতিপরকে টাচ স্ক্রিন ফোনের খুঁটিনাটি শেখাচ্ছেন প্রবাসী নাতি-নাতনিরা, কোথাও আবার পিএনপিসি-র জটলা। এইসব টুকরো ছবির মধ্যেই চলছে পুজোর আনন্দ।
অনিমিখা আবাসনের পুজো এবার ১২ বছর। পুজো কমিটির পক্ষ থেকে মধুছন্দা সেনগুপ্ত জানান, সাবেকিয়ানা বজায় রেখেও প্রযুক্তির উন্নয়নকে কাজে লাগানো সম্ভব—সেটা দেখিয়েছেন ওঁরা মণ্ডপসজ্জায়। দেবী মূর্তি সাবেক রীতির। মণ্ডপে আছে খড়, পাট-এর কাজ। রঙবাহারি এই মণ্ডপে গ্রামীণ ও শহুরে সভ্যতা ও সংস্কৃতিকে মিলিয়ে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে।
Be the first to comment