রবিবার দুপুর থেকেই শিরোনামে ছিল হরিদেবপুর। পুলিশ জানিয়েছিল, হরিদেবপুরের রাজা রামমোহন রায় রোড লাগোয়া এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছে ১৪টি ভ্রূণ। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে যান মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। আসেন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারও। পুলিশ জানায়, ময়নাতদন্তের জন্য ভ্রূণ সমেত প্যাকেটগুলি নিয়ে যাওয়া হয়েছে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে।
কিন্তু এই পুলিশই সন্ধেবেলায় জানালো অন্য কথা। যে পুলিশ দিনের বেলায় জানালো ১৪টি ভ্রূণ উদ্ধার হয়েছে, কার্যত ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে তারাই সন্ধেবেলা জানাল ওই প্যাকেটে কোনও প্রাণের স্পন্দনই মেলেনি। এমনকী মেলেনি কোনও দেহাবশেষও। বরং পুলিশ জানিয়েছে, ওই প্যাকেটে পাওয়া গিয়েছে মেডিক্যালের বর্জ্য পদার্থ আর ড্রাই আইস। ঠিক এমনটাই জানিয়েছেন, জয়েন্ট সিপি ক্রাইম।
রবিবার দুপুরে পুলিশ জানিয়েছিল, হরিদেবপুরের রাজা রামমোহন রোড সংলগ্ন একটি পরিত্যক্ত জমি থেকে উদ্ধার হয়েছে ১৪টি ভ্রূণ। স্থানীয়রা জানিয়েছিলেন, ৭২ কাঠার ওই জমি দীর্ঘদিন ধরেই পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল। রবিবার পাঁচিল দিয়ে ঘেরা ওই জমি পরিষ্কার করতে যান পুরসভার সাফাইকর্মীরা। আর তখনই উদ্ধার হয় প্লাস্টিক বন্দি ভ্রূণ। পুলিশ জানিয়েছিল, আলাদা আলাদা প্লাস্টিকে মোড়া ছিল ১৪টি ভ্রূণ। বরফ দিয়ে রাখা হয়েছিল প্লাস্টিকের মধ্যে। যাতে পচন ধরে এলাকায় দুর্গন্ধ না ছড়ায় সে জন্য সতর্কতা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল রাসায়নিকও।
এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় ওই এলাকায়। আতঙ্কিত বাসিন্দারা খবর দেন স্থানীয় কাউন্সিলরকে। তিনি বিষয়টি জানান মেয়র এবং স্থানীয় বিধায়ককে। খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। আসে বিশাল পুলিশবাহিনী। আসেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার।
তদন্ত শুরু করার পর পুলিশ জানিয়েছিল, তাদের অনুমান আশেপাশের কোনও নার্সিংহোম বা ক্লিনিক এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। এমনকী বেআইনি গর্ভপাতের কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে বলেও অনুমান করছিল পুলিশ। স্থানীয় নার্সিংহোমগুলিতেও অভিযান চালায় তারা। পুলিশ আরও জানিয়েছিল, ওই জমির মধ্যে রয়েছে একটি ডোবা। তাদের অনুমান সেখানেও থাকতে পারে ভ্রূণ। তদন্তের সাপেক্ষে সেখানেও তল্লাশি চালাতে পারে পুলিশ।
Be the first to comment