জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় কলকাতা প্রেস ক্লাবে ‘বঙ্গবন্ধু সংবাদ কেন্দ্র’র উদ্বোধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এই সংবাদ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সাইমুল সালোয়ার কমল, তৌফিক হাসানসহ বিশিষ্টজন ও সাংবাদিকরা।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এমন এক মুহূর্তে কলকাতা প্রেস ক্লাবে বঙ্গবন্ধু সংবাদ কেন্দ্র স্থাপনা হচ্ছে, যা দুই দেশের কাছে তাৎপর্যপূর্ণ। চলতি বছর বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ, মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর, ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর এবং ভারত-বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন হচ্ছে।
পাশাপাশি এদিন ড. হাছান মাহমুদ কলকাতার সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অত্যাচার ও বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করেন। প্রসঙ্গত, এদিন, কলকাতার পাঁচজন বর্ষীয়ান সাংবাদিককে ‘মুক্তিযুদ্ধ সুবর্ণজয়ন্তী কলম সেনা’ সম্মাননা দেওয়া হয়। যারা সেই সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে এই যুদ্ধের ঘটনা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেছিলেন। সম্মাননা পাওয়া সাংবাদিকরা হলেন- বাংলা স্টেটসম্যানের মানস ঘোষ, মুক্তিযুদ্ধের সংবাদ সংগ্রহকারী দিলিপ চক্রবর্তী, টেলিগ্রাফের তরুণ গাঙ্গুলি, আনন্দবাজারের সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তথ্যমন্ত্রী সবার হাতে সম্মাননা তুলে দেন।
তবে এদিন বঙ্গবন্ধু সংবাদ কেন্দ্র উদ্বোধনের পরে তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনে অংশ নেন। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বাংলাদেশে সম্প্রতি দুর্গাপূজায় সাম্প্রদায়িক হামলার প্রসঙ্গ ওঠে। মন্ত্রী বলেন, এ ধরনের কাজ আমাদের সরকার প্রশ্রয় দেয় না। আমরা হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ সব সম্প্রদায়কে নিয়ে চলি। আমাদের দেশে অশুভ শক্তিরা বলে, আওয়ামী লীগ ভারতের দালাল। আপনারা ভারতের সাংবাদিকরা জানেন, এসব কথা কোনো রাজনৈতিক দল বলতে পারে। আসলে ভোট এলে বিএনপি-জামায়াত এসব করে দাঙ্গা বাধাতে চায়।
তিনি বলেন, পবিত্র কোরআন নিয়ে পূজামণ্ডপে রাখা ইকবালের নাম সামনে এসেছে। আমি একে কোনো ধর্মের আখ্যা দিতে চাই না। এর পেছনে অন্য ইন্ধনদাতারা আছে, বুঝতে পারছি। এবং শিগগির সামনে আসবে। ২১ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে কে হিন্দু কে মুসলমান এটা চিহ্নিত করাই আমাদের কাছে লজ্জার। বাংলাদেশের পূজা উৎসব শুধু হিন্দুদের উৎসব নয়, সেটা গোটা বাংলার উৎসব। একইভাবে ঈদ উৎসব।
ড. হাছান আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী যা মনে করেন আমরাও তাই মনে করি। আমাদের প্রথম পরিচয় আমরা বাঙালি, পরে হিন্দু-মুসলমান। সে কারণেই আমরা বলি, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। জামায়াত আমাকেও জবাই করতে চেয়েছিল। ২১ আগস্ট চক্রান্ত কারা করেছিল আপনারাও জানেন। আমাদের দেশে বিএনপি-জামায়াত সম্প্রদায় দেখে আর ভোট এলেই নিরীহ মানুষদের উসকে দেয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দিল্লির হাইকমিশন ও কলকাতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের কর্মকর্তারা। উপস্থিত ছিলেন কলকাতা প্রেস ক্লাবের প্রেসিডেন্ট স্নেহাশীষ সুরসহ দুই দেশের গণমাধ্যমের প্রতিনিধি ও কলকাতার বিশিষ্টজনরা।
Be the first to comment