ব্রততী ঘোষ
গরমে নানারকম অসুখ-বিসুখের সম্ভবনা থাকে। প্রচণ্ড গরমে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন যে কেউ। তাই সতর্ক হতে হবে আগে থেকেই। গরমকালের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা ও তার জন্য কি কি করণীয় এ বিষয়ে বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা হয়, তার ভিত্তিতেই একটি প্রয়োজনীয় আলোচনা এখানে তুলে ধরা হল।
জলশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন
গরমের সময় অতিরিক্ত ঘাম শরীরের প্রয়োজনীয় লবণ বের করে দেয়। ফলে মারাত্মক জলাভাব তৈরি হয়। এই জলাভাব দেহের রক্তচাপ কমিয়ে দেয় ও শরীরকে দুর্বল করে ফেলে। জলের অভাব বেশি হলে কিডনিতেও সমস্যা হতে পারে। তাই গরমে খেতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল।
ঠান্ডা-জ্বর ও অন্যান্য অসুস্থতা
প্রচণ্ড গরম থেকে এসে খুব ঠান্ডা বা বরফ-জল পান করার অভ্যাস শরীরের স্বাভাবিক ভারসাম্যকে নষ্ট করে দেয়। আর এই কারণে সর্দি-জ্বরের প্রকোপ দেখা যায় বেশি। এছাড়াও ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ অন্যান্য শারীরিক সমস্যাও হতে পারে। আবার প্রচণ্ড গরমের সময় পিপাসা মেটাতে অনেকেই রাস্তার বিভিন্ন ধরনের শরবত পান করে থাকেন, যা জলবাহিত রোগের অন্যতম উৎস। এ সব পানীয়তে টাইফয়েড, আমাশয়, ডায়রিয়া, হেপাটাইটিস সৃষ্টিকারী জীবাণু থাকে, যা পেটের অসুখ ও জন্ডিসের জন্য দায়ী। তাই এ বিষয়গুলো এড়িয়ে চললে রোগবালাই থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।
হিটস্ট্রোক
তীব্র গরমের একটি ভয়ংকর সমস্যা হচ্ছে হিটস্ট্রোক। ক্রমশ আমরা নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া থেকে চরম আবহাওয়ার মধ্যে পড়ছি। জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তনের কারণে অসহনীয় তাপমাত্রা সৃষ্টি হচ্ছে প্রকৃতিতে। এ সময় হিটস্ট্রোক হওয়া স্বাভাবিক। শরীর ব্যথা, পিপাসা, শ্বাসকষ্ট হওয়া, এলোমেলো কথা বলা, শরীরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকা এই সবই হিট স্ট্রোকের লক্ষণ। তাই এ সব ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।
ত্বকের বিভিন্ন অসুখ
গরমের সময় মুখে ব্রণসহ বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ দেখা দেয়। ঘামাচি হয়। দীর্ঘদিন অযত্ন-অবহেলা করলে ফাঙ্গাল ইনফেকশনও হতে পারে। তাই প্রতিদিন একাধিকবার স্নান করার পাশাপাশি বাইরে থেকে এসে হাত, পা ও মুখ ধুয়ে নিতে হবে।
চোখের সমস্যা
তীব্র গরমে অতিরিক্ত তাপমাত্রা ও দূষণের কারণে চোখেও হতে পারে বিভিন্ন সমস্যা। যেমন- চোখ চুলকানো, লাল হয়ে যাওয়া, চোখ দিয়ে অনবরত জল ঝরা, চোখের জল শুকিয়ে যাওয়া ইত্যাদি। গরমের মধ্যে রোদে বেশিক্ষণ ধরে কাজ করলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি চোখের ক্ষতি করতে পারে। তাই প্রতিবার বাইরে থেকে এসে ঠান্ডা জল দিয়ে চোখ ধুতে হবে।
গরমে সুস্থ থাকতে আর যা করতে পারেন
যেহেতু গরমে ঘামের সঙ্গে জল ও লবণ দুই-ই বের হয়ে যায়, তাই প্রচুর পরিমাণ জল ও লবণযুক্ত পানীয় যেমন স্যালাইন খেতে হবে। এ ছাড়া কোলা জাতীয় পানীয় পান না করে টাটকা ফলের রস, ডাবের জল পান করতে পারেন।
Be the first to comment