স্কুলের জামায় বিশ্ব বাংলার লোগো কেন ব্যবহার করা হবে? এই প্রশ্ন তুলে এবার কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা। সোমবার আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্ট’স ফেডারেশন। তাদের বক্তব্য, স্কুলের নিজস্ব ব্যাজ বদলে কেন বিশ্ব বাংলার লোগো ব্যবহার করা হবে? মামলাকারীদের দাবি, বিশ্ব বাংলার লোগো রাজ্যের হস্তশিল্প, বস্ত্রশিল্পের ক্ষেত্রকে তুলে ধরার জন্য প্রচারমূলক হিসাবে ব্যবহার করা হয়। স্কুল পড়ুয়াদের জামায় কেন সেই লোগো থাকবে? এই বিতর্কের সূত্রপাত রবিবার একটি নির্দেশিকা ঘিরে। রাজ্য সরকারের সেই নির্দেশিকায় বলা হয়, নীল-সাদা স্কুল পোশাক পরবে ছেলে মেয়েরা। শার্ট ও কামিজে বসানো থাকবে বিশ্ব বাংলার লোগো।
এই পোশাক বিতর্কে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে স্কুল ইউনিফর্ম নিয়ে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এটা একেবারে পরের ধনে পোদ্দারি। সমগ্র শিক্ষার অন্তর্গত ফ্রি ইউনিফর্ম দেওয়া কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকের প্রকল্প। সমগ্র শিক্ষা প্রকল্প। কেন্দ্রের শিক্ষামন্ত্রকের অর্থ নিয়ে রাজ্য সরকার দাদাগিরি করবে এটা তো হয় না। আমরা বিষয়টি দেখব। বিশ্ব বাংলার লোগোর কথা বলা হচ্ছে, সেটাও তো দেওয়া যায় না। এটা তো একটা এমএসএমই সংস্থা করে। তা হলে তো এবার যে যার মতো সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে দেবে।”
একই বক্তব্য বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর। তিনি বলেন, “এটা সরাসরি স্কুলের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা। স্কুলের পোশাক নীল সাদা হতে পারে, গেরুয়া সাদা হতে পারে কিংবা সবুজ সাদা হতে পারে। সেটাই বহাল রাখতে হবে। এটা কেন্দ্রের সমগ্র শিক্ষা মিশনের টাকা।” যদিও তৃণমূল নেতা তাপস রায় এ প্রসঙ্গে বলেন, “শুভেন্দু অনেক কিছুই বলে। ওর কথায় কিছু আসে যায় না। একটা সরকারি সিদ্ধান্ত, সেটা কার্যকর পড়ুয়া আর অভিভাবকরা করবেন।”
তবে শিক্ষক সংগঠনও এই সিদ্ধান্তে খুব একটা খুশি নয়। শিক্ষক সংগঠনের নেতা চন্দন মাইতি বলেন, “এরকম কিছু হলে স্কুলের ঐতিহ্য নষ্ট হবে। এটা আবেগে আঘাত করার সমান হবে। স্বাধীনতার আগে কিংবা পরে কোনও সরকার এরকম ঘটনা ঘটাতে সাহস দেখায়নি। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এই নিয়ম হলে বাকি চার শ্রেণির ছেলেমেয়েরা কী পরবে? তা হলে কি এক স্কুলে দু’রকম ইউনিফর্ম চালু থাকবে?”
Be the first to comment