ভিতরে জাভড়েকর, বাইরে হাতাহাতিতে জড়ালো বিজেপি কর্মীরা

Spread the love

দীর্ঘ ২০ বছরের নরেন্দ্র মোদির শাসনকালের সুফল তুলে ধরতে শনিবার কলকাতার বুকে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল বিজেপি। এদিন আইসিসিআরের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে দিল্লি থেকে উড়ে এসেছিলেন স্বয়ং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। কিন্তু তিনি যখন বক্তব্য রাখছেন সেই সময় বাইরে বিজেপির দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ধস্তাধস্তি, হাতাহাতি, মারামারিকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার পরিস্থিতির সৃষ্টি হল।

শনিবার সকাল থেকে দফায় দফায় অনুষ্ঠানে অংশ নেন তফসিলি থেকে সব শাখার প্রতিনিধিরাই। সুকান্ত মজুমদার না থাকলেও, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, শমীক ভট্টাচার্য-সহ রাজ্য নেতৃত্বের অনেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। মোদির ২০ বছরের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে আয়োজন হয়েছিল বিশেষ সেমিনারেরও। সেখানে বক্তৃতা করছিলেন জাভড়েকর। সেই সময়ই আইসিসিআর-এর বাইরে ধুন্ধুমার বেধে যায়।

জানা গিয়েছে, সব্যসাচী রায়চৌধুরী নামের এক ব্যক্তিকে আচমকাই মারধর করতে শুরু করেন বিজেপির অভিজিৎ নাহা। তৃণমূলের দালাল, তোলাবাজ বলে কটাক্ষও করা হয় সব্যসাচীকে। একসময় সব্যসাচীর কলারও ধরতে দেখা যায় অভিজিৎকে। তবে তাঁরা দুজন নন, এদিন আরও কয়েকজনকে ওই গন্ডগোলে দেখা যায়। সেখানে সব্যসাচীর উদ্দেশে অভিজিৎকে বলতে শোনা যায়, আপনি তৃণমূলের দালাল। আইপিএস বলে পরিচয় দিয়ে টাকা তোলেন। সিবিআই-এর নাম করে টাকা তোলেন বিভিন্ন জায়গায়। দলের নেতাদের নাম করে গরিব, বেকার ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে টাকা তোলেন।

এর পাল্টা অভিজিতের উদ্দেশে সব্যসাচী বলেন, গরু চুরি করো তোমরা। তিনি নিজে থেকে সেখানে আসেননি, আইনজীবী হিসেবে বঙ্গ বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য ওকালতনামায় সই করতে তাঁকে ডেকে পাঠানোয় তিনি এসেছিলেন বলেও জানান সব্যসাচী।

তারপরও ঝামেলায় ইতি পড়েনি বরং হাতাহাতি, টানা-হ্যাঁচড়া চলতে থাকে। বিজেপি নেতাদের নাম করে সব্যসাচী বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে সব্যসাচী টাকা তুলেছেন বলে অভিযোগ করেন অভিজিৎ।

বাইরের ঝামেলার খবর এরপর ভিতরেও পৌঁছয়। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, একথা ঠিক যে, ওকালতনামায় সই করার জন্য এসেছিলেন উনি। কলকাতা পৌরসভা নির্বাচনের আগে অভিজিৎ নাহাই বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সব্যসাচী রায়চৌধুরীর সঙ্গে আমার পরিচয় করিয়ে দেয়। উনি দলের সদস্য নন। আমি শুধু বলতে পারি, আমার সল্টলেকের বাড়িতে এসে সব্যসাচীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয় অভিজিৎই। উনি সাবর্ণ্য রায়চৌধুরীর পরিবারের ছেলে। এর বাইরে কিছু বলছি না।

রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের হাতে দলের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ কতটা, তা নিয়ে ইতিমধ্যে উঠছে প্রশ্ন। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যেখানে মোদিকে নিয়ে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছেন, সেই সময় অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে এভাবে বিজেপির দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ধস্তাধস্তি, হাতাহাতি, মারামারিতে দলের কর্মীদের উপর বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের নিয়ন্ত্রণ নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। অভিজিৎ খোদ যেখানে সব্যসাচীর সঙ্গে শমীকের পরিচয় করিয়ে দেন, সেখানে এমন ঝামেলা বাধল কী ভাবে, তা নিয়ে উঠছে বিস্তর প্রশ্ন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*