এনআরএস মেডিকেল কলেজের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী আবারও বৈঠকে বসেন। সেখানে জুনিয়র ডাক্তারদের আসতে বলা হয়েছিল কিন্তু দুদিনই তারা আসেনি। অগত্যা মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা, এবং অভিজিৎ চৌধুরী ও সুকুমার মুখার্জি সহ পাঁচ জন ডাক্তারদের নিয়ে বৈঠক করেন দুদিনই। বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ডাক্তারেরা কাজে ফিরে আসুক। মুখ্যমন্ত্রী ও মুখ্যসচিব মলয় দে দুজনেই বলেন যে জুনিয়র ডাক্তারদের সেগুলি মেনে নেওয়া হবে। হাসপাতালের ভিতরে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে ১০ তারিখ কিন্তু তার পরিপ্রেক্ষিতে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
ঘটনায় আহত ডাক্তার এখন সুস্থ আছেন। প্রসঙ্গত, ঘটনার পর থেকে মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র, স্বাস্থ্য সচিব রাজীব সিনহা, পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা এদের সকলকে বারবার পাঠিয়েছেন আন্দোলনরত ডাক্তারদের কাছে এমনকি চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের ফোনে কথাও বলতে চেয়েছেন তাদের সাথে, কিন্তু তারা কথা বলেনি। তাদের নিরাপত্তার জন্য অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের নেতৃত্বে একটি টিম গঠন করা হয়েছে। যারা সারাদিন ধরে হাসপাতালে ডাক্তারদের সুরক্ষা দেবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি বহুবার চেষ্টা করেছি তাদের সাথে কথা বলতে। ১০ তারিখের ঘটনাকে তিনি দুর্ভাগ্যজনক বলে আখ্যা দেন।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন একথাও বলেন যে পিজিতেও আমি যেতাম না কিন্তু কোনো এক রোগীর পরিবার রোগীর চিকিৎসা না পেয়ে যন্ত্রণায় ছটফট করার অভিযোগ জানায় সেজন্যই আমি গিয়েছিলাম এমারজেন্সি চালু আছে কিনা দেখার জন্য। আমি যখন হেঁটে যাই পিজির ভিতরে সেসময় আমাকে ধাক্কা মারা হয়, তা সত্তেও আমি পুলিশকে বলি এদের গ্রেফতার করবেননা। তিনি বলেন আমি নিজে চিঠি দিয়েছি ডাক্তারদের এই আন্দোলন প্রত্যাহার করার জন্য। তিনি বলেন আমি এসমা জারি করতে চাইনা, উদাহরণ দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন ২০০৮ সালে উড়িষ্যায় সরকার ডাক্তারদের ধর্মঘটের হুমকি পেয়ে এসমা জারি করেছিল। ২০০৯ সালে মোদী সরকার গুজরাটে ডাক্তারদের অবরোধে এসমা জারি করেছিল, ১৫০ জন ডাক্তারকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল, ২০১৫ সালে আপ সরকার দিল্লীতে ডাক্তারদের আন্দোলনে এসমা জারি করেছিল। এই রকম রাজস্থান, হরিয়ানা, জম্মু কাশ্মীর, মনিপুর বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় থাকা সরকার বারে বারে ডাক্তারদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে এসমা জারি করে কিন্তু আমি এই এসমার বিরুদ্ধে। আমি চাইনা ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের কেরিয়ারে কোনো দাগ হোক। এসমা তো দূরের কথা আমি গ্রেপ্তারেরও বিরুদ্ধে। এদের এই আন্দোলনের পিছনে কেউ কেউ রাজনৈতিক প্ররোচনা দেবার চেষ্টা চলছে। আমি চাই এদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক এবং এরা শীঘ্রই কাজে ফিরে আসুক অসহায়- অসুস্থ মানুষের স্বার্থে।
Be the first to comment