পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ‘পাকিস্তানের গোরবাচভ’ বলে কটাক্ষ করলেন পাকিস্তানের দক্ষিণপন্থী গোঁড়া রাজনীতিবিদ মৌলনা ফজলুর রহমান। ইমরানকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার জন্য দু’দিনের চূড়ান্ত সময়ও দেন তিনি।
সম্প্রতি পাকিস্তানে ইমরান সরকারকে ফেলে দেওয়ার জন্য মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে। এই মিছিলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আজাদি মার্চ’। আর এই মিছিল থেকেই একের পর এক হুঙ্কার ছাড়েন ফজলুর রহমান। মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের ধৈর্যের পরীক্ষা না নিয়ে ইমরানের সরে আসা উচিত বলে জানান তিনি। পাকিস্তানের সরকার শুধু সাধারণ মানুষই চালাবে বলেও দাবি করেন ফজলুর।
পাকিস্তানের দক্ষিণ পন্থী উগ্র সংগঠন জামায়েত উলেমায়-ই-ইসলামি-ফজলের ডাকা সুবিশাল মিছিল সিন্ধ প্রদেশ থেকে বৃহস্পতিবারই শেষ গন্তব্য ইসলামাবাদে পৌঁছেছে। এই মিছিলে পাকিস্তানের বহু বিরোধী নেতাও অংশগ্রহণ করেন।
ইসলামাবাদে পৌঁছে সেখানে একটি বহু দলীয় বৈঠক ডাকেন ফজলুর। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির সভাপতি বিলাবল ভুট্টো-জারদারি, পাখতুনখাওয়া মিলি আওয়ামি পার্টির সভাপতি মেহমুদ খান আছাকজাই। পাকিস্তান মুসলিম লিগের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এহসান ইকবাল এবং খাজা আসিফ। আওয়ামি ন্যাশনাল পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি মিয়াঁ ইফতিকার হুসেন।
পাকিস্তানে ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফের সরকার ফেলে দেওয়ার ডাক দেন ফজলুর রহমান। উগ্র দক্ষিণপন্থী ওই নেতা এ দিন বলেন, ‘আমরা ওকে দু’দিন সময় দিচ্ছি। ২৫ তারিখে যে নির্বাচন হয়েছে তা আমরা মানি না। যেমন আমরা এই সরকারকেও মানি না।’ এখানেই থেমে না থেকে আরও সুর চড়িয়ে রহমান বলেন, ‘ও তো পাকিস্তানের গোরবাচভ। ইমরানের যত শীঘ্র সম্ভব পদত্যাগ করা উচিত। নয়ত ভবিষ্যতে কি হবে তা আমরা ঠিক করে নেব।’
কাশ্মীর ইস্যু নিয়েও সরকারকে তুলোধোনা করা হয়েছে এই মিছিল থেকে। করতারপুর করিডর খুলে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব করার চেষ্টা সাধারণ মানুষ মেনে নেবে না বলেও জানান বিরোধী দলের নেতারা। পাকিস্তানের ভেঙে পড়া অর্থনীতির জন্যও দায়ি করা হয়েছে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কে। কিন্তু এই মিছিলকে বেশি গুরুত্ব দিতে নারাজ ইমরান। গিলগিট-বালতিসস্থানে এক সভায় পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওরা মিছিল করতেই পারে। মিছিলের মাঝে যদি ওদের খাবার শেষ হয়ে যায় আমাদের সরকার খাবার পাঠাবে। কিন্তু আমরা আর ‘এনআরও’ দেব না।’
উল্লেখ্য এনআরও অর্থাৎ ন্যাশনাল রিকনসিলেশন অর্ডিন্যান্স ২০০৭ সালে পাকিস্তানে পাস হয়। এর ফলে কোনও রাজনীতিবিদ, সমাজ কর্মী এবং আমলাকে হত্যা,সন্ত্রাসবাদ,দুর্নীতি,আর্থিক তছরুপ প্রভৃতি মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হত। এই মিছিলের বৈধতার প্রশ্ন তুলে ইমরান এ দিন বলেন, ‘ওরা কাদের থেকে স্বাধীনতা চায়? সংবাদমাধ্যম ওখানে গিয়ে জিজ্ঞেস করুক। আমি নিশ্চিত কেউ জবাব দিতে পারবে না।’ এই মিছিল শুধুমাত্র পাকিস্তানের শত্রুদেরই খুশি করছে বলে জানান পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
Be the first to comment